ভারতের নতুন পার্লামেন্ট ভবনের উদ্বোধন নিয়ে তুমুল বিতর্কে জড়িয়েছেন ক্ষমতাসীন বিজেপি এবং বিরোধী দলের নেতারা। বুধবার কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস, আম আদমি পার্টিসহ ১৯টি দলের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে উদ্বোধন অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। আগামী রোববার ভবনটির উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে বিরোধী নেতারা বলছেন, ভারতের সর্বোচ্চ সাংবিধানিক কর্তৃপক্ষ হিসেবে ভবনটির উদ্বোধন রাষ্ট্রপতির করা উচিত।
এদিকে শাসক দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতারা এটিকে বিরোধীদের ‘রাজনৈতিক খেলা’ বলে অভিহিত করেছেন।
১৯টি দলের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সংসদ ভবন থেকে গণতন্ত্রের অন্তরাত্মাকেই বের করে দেওয়া হয়েছে। নতুন ভবন তাদের কাছে তাই অর্থহীন। দেশের রাষ্ট্রপতি সংসদের অভিভাবক। সংবিধানের ৭৯ অনুচ্ছেদেও তা স্পষ্ট করে বলা আছে। মোদির দ্বারা ভবনটি উদ্বোধন করার সিদ্ধান্ত গুরুতর অপমান এবং ভারতের গণতন্ত্রের ওপর সরাসরি আক্রমণ।
তাদের দাবি, রাষ্ট্রপতিই সংসদের অধিবেশন ডাকেন এবং তিনিই সমাপ্তি ঘটান। প্রতিবছর রাষ্ট্রপতির ভাষণ দিয়ে দুই কক্ষের সদস্যদের উপস্থিতিতে সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়। সবার আগে বিবেচিত ও আলোচিত হয় তার ভাষণের ওপর ধন্যবাদ জ্ঞাপক প্রস্তাব। নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন রাষ্ট্রপতিকে দিয়েই করানো উচিত। তা না করে, তাকে ব্রাত্য করে প্রধানমন্ত্রী প্রচারের সব আলো নিজের মুখে ফেলছেন।
বিরোধীরা বলছে, প্রথম আদিবাসী নারী হিসেবে দ্রৌপদী মুর্মু দেশের রাষ্ট্রপতি হওয়ায় একীকরণের বাতাবরণ তৈরি হয়েছিল। অথচ রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ও উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় কাউকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।
সরকারের এই আচরণ রাষ্ট্রপতির পক্ষে চরম অসম্মানজনকই শুধু নয়, সংবিধান অবমাননারও শামিল।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, অনুষ্ঠানের জন্য সব রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল এবং বিরোধীদের অনুষ্ঠানটিকে কেন্দ্র করে রাজনীতি না করার আহ্বান জানানো হয়েছে। সরকার সবাইকে উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ করেছে। সবাই নিজ নিজ অনুভূতি অনুযায়ী কাজ করবে।
দেশটিতে বর্তমানে ক্ষমতাসীন বিজেপি এবং বেশির ভাগ বিরোধী দলগুলোর মধ্যে সম্পর্ক বরাবরই উত্তেজনাপূর্ণ। এর কারণে প্রায়ই সংসদ অধিবেশন চলাকালীন অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। সম্প্রতি কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে মানহানির মামলায় কারাগারে সাজা দেওয়ার পর সংসদ থেকে তাকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়। এরপর বিরোধী নেতারা প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন।