গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে কাতারের আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৮ ভারতীয় নাগরিকের মুক্তির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে উদ্যোগী হতে বলেছে কংগ্রেস।
শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়রাম রমেশ ‘এক্স’ হ্যান্ডেলে এক বার্তায় জানান, ভারতীয় নৌবাহিনীর ওই সাবেক কর্মকর্তাদের মুক্তির বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে বলে তাদের আশা। একই সঙ্গে এজন্য ভারত সরকারের সবধরনের কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতার প্রয়োগ করা উচিত বলে মনে করেন তিনি।
কাতারের এক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ভারতীয় নৌবাহিনীর ওই সাবেক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গত বৃহস্পতিবার মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। কাতারের এক নিম্ন আদালত ওই রায় দেন। ভারতীয় নৌবাহিনীর সাবেক ওই আট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ কী ও কেন—সে বিষয়ে কাতার সরকার বা ভারত কেউ–ই এখনো পর্যন্ত প্রকাশ্যে কিছু জানায়নি। যদিও বিভিন্ন সূত্রের খবর, ইসরায়েলের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে গত বছরের ৩০ আগস্ট তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
দণ্ডপ্রাপ্ত ওই ভারতীয়রা হলেন ক্যাপ্টেন (অব.) নভতেজ সিং গিল, ক্যাপ্টেন (অব.) বীরেন্দ্র কুমার ভার্মা, ক্যাপ্টেন (অব.) সৌরভ বশিষ্ট, কমান্ডার (অব.) অমিত নাগপাল, কমান্ডার (অব.) পূর্ণেন্দু তিওয়ারি, কমান্ডার (অব.) সুগুনাকর পাকালা, কমান্ডার (অব.) সঞ্জীব গুপ্ত ও নাবিক রাগেশ। গত এক বছর ধরে ওই ব্যক্তিদের জামিনের চেষ্টা করেও ভারত বারবার ব্যর্থ হয়েছে। এবার কাতারি আইনে তাদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলো।
দণ্ডপ্রাপ্ত ভারতীয় সাবেক নৌ কর্মকর্তারা কাতারের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ‘আল দাহারা গ্লোবাল টেকনোলজিস অ্যান্ড কনসালট্যান্সি সার্ভিসেস’–এ কর্মরত ছিলেন। ওই সংস্থা সেনা ও নিরাপত্তাসংক্রান্ত প্রযুক্তি ও পরিষেবা দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত। দণ্ডিতদের পরিবারের পক্ষ থেকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও তাদের মুক্তির জন্য সরাসরি হস্তক্ষেপ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
মৃত্যুদণ্ডের রায়ের খবর আসার সঙ্গে সঙ্গেই ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে জানায়, তারা মর্মাহত ও বিস্মিত। কোনোরকম মন্তব্য না করে তাতে বলা হয়, ওই আট ব্যক্তিকে সবধরনের আইনি সহায়তা দেওয়া হবে। তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে।
কাতারের ওই সংস্থার মালিক খামিস আল-আজমি। তিনি রয়্যাল ওমান এয়ার ফোর্সের অবসরপ্রাপ্ত স্কোয়াড্রন লিডার। ভারতীয়দের সঙ্গে তাঁকেও গত বছর গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। কিন্তু তিন মাস পরে তিনি জামিনে মুক্তি পান। চলতি বছরের মে মাসে ওই সংস্থা কাতারের অফিস বন্ধ করে দেয়।
বিভিন্ন ভারতীয় পত্রপত্রিকার খবর অনুযায়ী, ভারতীয়দের বিরুদ্ধে অভিযোগ ও তাঁদের গ্রেপ্তারের পেছনে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের হাত রয়েছে। পাকিস্তান চায় না, পশ্চিম এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক ভালো হোক।