জলবায়ুজনিত বিপর্যয়ের বিধ্বংসী বৈশ্বিক প্রভাব রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে তীব্র তাপপ্রবাহ থেকে ভারী বৃষ্টিপাত। ২০২৩ সালে রেকর্ড তাপপ্রবাহগুলো ইউরোপের অনেকাংশের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে। ফলে দাবানল ও আকস্মিক বন্যা হয়ে মৃত্যু হয় অনেকের।
চীনে টাইফুনের কারণে স্কুল বন্ধ ও মানুষদের সরিয়ে নিতে হয়েছে। অপরদিকে, দক্ষিণ এশিয়ায় ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা ও দীর্ঘ বর্ষা মৌসুমে মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরের ঘটনা বাড়ছে।
গত সপ্তাহে জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তনের ওপর একটি নতুন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। যাতে বলা হয়, প্যারিস চুক্তিতে স্বাক্ষর করে বিশ্ব উষ্ণায়নের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সম্মত দেশগুলো সীমিত অগ্রগতি লাভ করেছে।
২০১৫ প্যারিস চুক্তি এই শতাব্দীর বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধিকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে সীমাবদ্ধ রাখার জন্য একটি আইনত বাধ্যতামূলক চুক্তি। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে তাপমাত্রার স্তরটি অতিক্রম করে, ব্যাপক বন্যা, খরা ও তাপপ্রবাহ থেকে উদ্ভূত সমস্যাগুলো নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।
আবহাওয়ার চরিত্র আরও পরিবর্তনশীল হয়ে উঠছে এবং জলবায়ুজনিত অভিবাসনের সম্ভাবনা ক্রমশ একটি মূল সমস্যা হয়ে উঠছে।
জাতিসংঘের মতে, অতিবৃষ্টি ও খরাসহ চরম আবহাওয়ার ঘটনাগুলো ইতোমধ্যেই প্রতি বছর গড়ে ২ কোটির বেশি লোককে তাদের বাড়িঘর ছেড়ে তাদের দেশে অন্য অঞ্চলে চলে যেতে বাধ্য করছে।
জলবায়ুজনিত অভিবাসন হল জলবায়ু-সম্পর্কিত বিপর্যয়ের প্রভাবের কারণে মানুষকে নতুন জায়গায় যেয়ে বসতি স্থাপন করা। এই বিপর্যয় গুলোর মধ্যে রয়েছে খরা, যা খাদ্য ও কৃষি সংকটের দিকে ধাবিত করে।
ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অফ রেড ক্রস এন্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিজ (আইএফআরসি)-এর অভিবাসন ও স্থানচ্যুতি সংক্রান্ত বিশ্বব্যাপী নেতৃত্ব দেওয়া ইজাকিয়েল সিম্পেরিংহ্যাম আল জাজিরাকে বলেন, “জলবায়ু জনিত অভিবাসন ও বাস্তচ্যুতি একটি সংজ্ঞায়িত চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠছে, যা আমরা একটি মানবিক নেটওয়ার্ক হিসাবে দেখছি। আমরা এটি শুধুমাত্র একটি অঞ্চলে দেখছি না… আমরা এটি বিভিন্ন অঞ্চলে দেখছি। আমরা এটিকে ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে প্রকাশিত হতে দেখতে পাচ্ছি।”
জলবায়ু সংস্থা ক্লাইমেট রিফিউজিস জানায়, জলবায়ু পরিবর্তন একটি মারাত্মক হুমকি হিসাবে বিদ্যমান থাকতে পারে। সংস্থাটি বলে, “বিদ্যমান ঝুঁকিগুলিকে বাড়িয়ে তোলা ও নতুনগুলো তৈরি করা, যেমন খাদ্য ও জলের নিরাপত্তাহীনতা ও সম্পদের উপর প্রতিযোগিতা, যা সংঘর্ষ ও বাস্তচ্যুতিতে অবদান রাখে।”
আল-জাজিরা