হামাসের শীর্ষ নেতা ইসমাইল হানিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেছেন চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দূত ওয়াং কেজিয়ান। গত বছরের অক্টোবরের ৭ তারিখে শুরু হওয়া ইসরায়েল-হামাস সংঘাতের পর এই প্রথম চীনের সঙ্গে হামাসের সরাসরি যোগাযোগ হলো।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতির বরাত দিয়ে হংকংভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দূত ওয়াং কেজিয়ান ও হামাসের পলিটিক্যাল ব্যুরোর প্রধান ইসমাইল হানিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় তারা গাজায় চলমান সংঘাত ও অন্যান্য বিষয়ে মতবিনিময় করেন। তবে এই বিষয়ে কোনো বিস্তারিত তথ্য দেয়নি চীন সরকার।
এদিকে হামাসের একটি সূত্রের বরাত দিয়ে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম জেরুসালেম পোস্ট জানিয়েছে—বৈঠকে ইসমাইল হানিয়া চীনা প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন, গাজায় চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসন শিগগির বন্ধ হওয়া উচিত এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার করতে হবে। এ সময় তিনি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিও জানান।
জেরুসালেম পোস্টের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ওয়াং কেজিয়ান ইসমাইল হানিয়াকে জানিয়েছেন, তার দেশ ফিলিস্তিনের জাতীয় ঐক্যের খাতিরে হামাসের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে আগ্রহী। এর আগে, গত সপ্তাহে ওয়াং কেজিয়ান ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিয়াদ আল-মালিকির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। সেখানে তিনি, চীনের দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানের প্রতি জোর দেন।
এর আগে, গত ১ মার্চ রাশিয়ার মধ্যস্থতায় মস্কোয় একই টেবিলে বসেছিল ফিলিস্তিনি বিভিন্ন স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী। সেই বৈঠকে হামাস, ফাতাহসহ সব পক্ষই ইসরায়েলকে মোকাবিলায় একটি ‘ঐক্যবদ্ধ কর্মপন্থা’ গ্রহণের বিষয়ে ইঙ্গিত দেয়।
রাশিয়ার মধ্যস্থতায় মস্কোয় অনুষ্ঠিত বৈঠকে অংশ নেয় হামাস, ফাতাহ, ইসলামিক জিহাদসহ ফিলিস্তিনি অন্যান্য স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী। বৈঠকে গাজায় চলমান যুদ্ধ ও যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে করণীয় সম্পর্কে আলোচনা হয়। এই বৈঠক এমন এক সময় অনুষ্ঠিত হলো, যার মাত্র কয়েক দিন আগেই ফাতাহের নেতৃত্বে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সরকার পদত্যাগ করেছে।
উল্লেখ্য, বিগত কয়েক বছর ধরে মস্কো হামাস ও ফাতাহসহ ইসরায়েলবিরোধী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করেছে। গাজায় ইসরায়েলি পদক্ষেপের মস্কোর সমালোচনা ও ইসরায়েলের তরফ থেকে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিষয়টি প্রত্যাখ্যানের পর দুই দেশের সম্পর্ক উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠেছে।