ব্রিকসকে (ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন, দক্ষিণ আফ্রিকা) সম্প্রসারণ করতে চায় জোটভুক্ত নেতৃস্থানীয় দেশ চীন ও রাশিয়া।
দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) থেকে শুরু হচ্ছে তিন দিনব্যাপী ব্রিকসের পঞ্চদশ শীর্ষ সম্মেলন। সম্মেলন শুরুর আগেই চীন ও রাশিয়া এই জোটকে বড় করতে ভারতের ওপর চাপ বাড়িয়েছে। সোমবার (২১ আগস্ট) চীন আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিকসের সম্প্রসারণের প্রস্তাব দেয় ভারতের কাছে। চীনের ওই প্রস্তাবে রাশিয়াও জোর সমর্থন দেয়।
জানা গেছে, ২২ আগস্ট সম্মেলন শুরুর আগে সম্প্রসারণ বিষয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকও হতে পারে।
কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, চীনের উদ্দেশ্য হলো আমেরিকার নেতৃত্বাধীন জি৭-এর সমকক্ষ একটি আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী তৈরি করা, যার রাশ থাকবে চীনের হাতে। অর্থাৎ পুরোনো ব্লক রাজনীতির ধাঁচে আমেরিকার বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী অক্ষ তৈরি করা। আমেরিকাসহ পশ্চিমি দুনিয়াকে মোকাবিলার জন্য সেই উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, ব্রিকসে যোগ দেওয়ার জন্য ৪০টির মতো দেশ আবেদন করে রেখেছে। আর্জেন্টিনা, আলজেরিয়া, ইরান, কিউবা, কঙ্গো, কাজাকস্তান, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, পাকিস্তান, বাংলাদেশের মতো দেশ রয়েছে তালিকায়।
এসব দেশের মধ্যে কোনটিকে নেওয়া যায়, তা নিয়ে সম্মেলনে আলোচনা শুরু করবে চীন। জিনপিং সরকার চেষ্টা করবে যেসব দেশে তাদের অর্থনৈতিক প্রভাব এবং আধিপত্য বেশি তাদের ব্রিকস গোষ্ঠীতে অন্তর্ভুক্ত করতে। তবে ভারত এখনই তাড়াহুড়ো করে কোনো দেশের অন্তর্ভুক্তি চাইছে না।
ব্রিকস গোষ্ঠীভুক্ত পাঁচটি দেশের ঐকমত্য না হলে বিধি অনুযায়ী নতুন কোনো দেশ সদস্য হতে পারবে না। ফলে ভারত না চাইলে একতরফাভাবে চীন বা রাশিয়ার পক্ষে কোনো দেশকে সদস্য করা সম্ভব নয়। আবার রাশিয়া ও চীনের যুগপৎ চাপ দীর্ঘদিন ধরে প্রতিহত করাও কঠিন বলে কূটনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছেন।
মোদি সরকারের মতে, ব্রিকসে আরও দেশকে অন্তর্ভুক্ত করার আগে এই গোষ্ঠীকে মজবুত এবং নিখুঁত করার দিকে নজর দেওয়া উচিত। যাতে সব কাজ ঠিকমতো হয়। অন্য আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর মতো ব্রিকসের কোনো নির্দিষ্ট সচিবালয় এখনো নেই। বহু মেকানিজম রয়েছে, যার নিয়মিত ব্যবহার হয় না। আবার একই কাজের জন্য একাধিক মেকানিজম রয়েছে। এগুলোকে আগে সংস্কার করা প্রয়োজন বলেই মনে করে ভারত। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা