প্রাণঘাতী ডেঙ্গুর বিস্তার বৃদ্ধি পেয়েছে। এই অবস্থায় জীবিত বা মৃত মশা ধরে দিলেই মিলবে নগদ অর্থ পুরস্কার। এ ছাড়া মশার লার্ভা জমা দিলেও পুরস্কার দেওয়া হবে। এই পুরস্কার ঘোষণা করেছে ফিলিপাইনের সবচেয়ে জনবহুল নগরকেন্দ্রগুলোর একটি বারাঙ্গে অ্যাডিশনাল হিলস কর্তৃপক্ষ।
এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে ফিলিপাইনের বারাঙ্গে অ্যাডিশনাল হিলসের গ্রামপ্রধান কারলিটো সার্নাল বলেন, “কেউ পাঁচটি মশা জমা দিতে পারলেই এক পেসো (স্থানীয় মুদ্রা) পুরস্কার পাবেন। সেখানে ডেঙ্গুতে দু’জন শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।”
কারলিটো সার্নাল বলেন, “জীবিত কিংবা মৃত মশা জমা দিলে মিলবে পুরস্কারের অর্থ। মশার লার্ভা জমা দিলেও পুরস্কার দেওয়া হবে। পরে অতিবেগুনি রশ্মি ব্যবহার করে জীবিত মশা নির্মূল করা হবে।”
রাস্তা পরিষ্কার রাখা ও ডেঙ্গুর জন্য দায়ী এডিস মশার বংশবিস্তারে সহায়ক পানি জমে থাকার জায়গা নষ্ট করার মতো বিদ্যমান ব্যবস্থার পরিপূরক হিসেবে জীবিত বা মৃত মশার বিনিময়ে পুরস্কারের ব্যবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে বলেও জানান গ্রামপ্রধান কারলিটো সার্নাল।
ফিলিপাইনের স্বাস্থ্য বিভাগ (ডিওএইচ) জানায়, ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে লড়তে স্থানীয় প্রশাসনের নির্বাহীদের সদিচ্ছা প্রশংসাযোগ্য। জানতে চাওয়া হয়, নগদ অর্থের বিনিময়ে মশা ধরা কিংবা মারা ডেঙ্গুর বিস্তার রোধে কার্যকর কৌশল কিনা, সেই প্রশ্নের কোনো জবাব পাওয়া যায়নি।
গ্রামপ্রধানের এমন পুরস্কার ঘোষণায় শুরু হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কমেন্টে একজন লিখেছেন, “এখন মশার খামার তৈরি করা হবে।” আরেকজন প্রশ্ন রেখে জিজ্ঞেস করেছেন, “শুধু একটি ডানা থাকলে কি মশা ফেরত দেওয়া হবে?”
এ বিষয়ে গ্রামপ্রধান কারলিটো সার্নাল বলেন, “মশা ধরা বা মারার বিনিময়ে নগদ অর্থ দেওয়ার বিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ শোরগোল পড়েছে, এটা আমি জানি। তবে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় এটি প্রয়োজন।”
সার্নাল আরও বলেন, “সম্প্রতি ব্যাপক মাত্রায় ডেঙ্গু সংক্রমণ হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন ওই এলাকায় ৪৪ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত করেছে। এটা অন্যতম বড় ও জনবহুল একটি এলাকা। কাজেই স্থানীয় সরকারকে সহায়তায় আমাদেরও কিছু করা আছে।”
ফিলিপাইনজুড়ে ক্রমেই ছড়িয়ে পড়ছে ডেঙ্গু সংক্রমণ।
দেশটির ডিওএইচ জানিয়েছে, চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ফিলিপাইনে ২৮ হাজার ২৩৪ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। সংখ্যাটি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪০ শতাংশ বেশি।