• ঢাকা
  • শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২৫, ১৬ মাঘ ১৪৩০, ১ শা'বান ১৪৪৬

ভারতে অ্যাপার্টমেন্টে ঝুলছিল বাংলাদেশি ছাত্রীর মরদেহ


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩০, ২০২৫, ০১:৫৭ পিএম
ভারতে অ্যাপার্টমেন্টে ঝুলছিল বাংলাদেশি ছাত্রীর মরদেহ
মোহনা মন্ডল। ছবি : সংগৃহীত

ভারতে একটি অ্যাপার্টমেন্ট থেকে মোহনা মন্ডল নামের এক বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। দেশটির গুজরাটের এম এস বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসি বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন তিনি। ভদোদরার রাওপুরা এলাকায় নর্মদা অ্যাপার্টমেন্টে একাই থাকতেন ২০ বছর বয়সী ওই শিক্ষার্থী।

বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) নিজস্ব প্রতিনিধির বরাতে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিন।

মোহনার এক বাংলাদেশি সহপাঠী বলেন, “দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় ৯০ শতাংশ নম্বর নিয়ে পাস করেছিল মোহনা। এরপর গত বছরের সেপ্টেম্বরে এম এস বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগে ভর্তি হন। প্রথমে সবার সঙ্গে হোস্টেলে থাকলেও পরে রাওপুরায় নর্মদা আপ্যার্টমেন্টে একা থাকতে শুরু করেন।”

ওই সহপাঠী আরও বলেন, “পড়াশোনা নিয়ে মোহনা বেশ কিছুটা চাপে ছিলেন। পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করতে পারবেন কিনা, তা নিয়েও বেশ কিছুটা মানসিক চাপে ছিলেন মোহনা।”

পুলিশ জানিয়েছে, একটি সুইসাইড নোট রেখে গেছেন ওই শিক্ষার্থী। যেখানে তিনি এই চরম পদক্ষেপ নিতে চলেছেন বলে জানান। যদিও তার এই মৃত্যুর জন্য কাউকেই তিনি দায়ী করে যাননি। তবে আত্মহত্যার কারণ সম্পর্কে স্পষ্ট করে সুইসাইড নোটে উল্লেখ নেই। মৃত্যুর কারণ নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা রয়েছে।

গত বছরই বাংলাদেশ থেকে গুজরাটের ভদোদরায় এম এস বিশ্ববিদ্যালয়ে ফার্মেসি বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন মোহনা। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) ফার্মেসি বিভাগের প্রথম বর্ষের প্রথম দিনের পরীক্ষা ছিল। কিন্তু সেই পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিলেন মোহনা। স্বাভাবিকভাবেই তার বাংলাদেশি সহপাঠীরা উদ্বিগ্ন ছিলেন। পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর মোহনার মোবাইলে ফোন করলে কোনো উত্তর পাওয়া যাচ্ছিল না।

অন্যদিকে মোহনার পরিবারের লোকজনও চিন্তিত ছিলেন। তারাও মোহনাকে ফোন করে ব্যর্থ হন। ফলে বাংলাদেশ থেকে মোহনার পরিবারের ফোন আসে তাদের সহপাঠীদের কাছে। এরপর কিছু অস্বাভাবিক ঘটনার ইঙ্গিত পেয়েই মঙ্গলবার রাতে মোহনার অ্যাপার্টমেন্টে পৌঁছান তার সহপাঠীরা। প্রথমে বাইরে থেকে তার ঘরের দরজায় নক করলেও ভেতর থেকে কোনো সাড়া আসেনি। এরপরই ওই ঘরের দরজা ভাঙ্গা হয় এবং ভেতরে ঢুকতেই মোহনাকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে রাওপুরা থানার কর্মকর্তা কুলদীপ সিং যাদব বলেন, “আমরা ওই বাংলাদেশি ছাত্রীর সহপাঠীদের জিজ্ঞাসা করেছি, কিন্তু তাদের কাছেও কোনো তথ্য নেই। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে পড়াশোনা নিয়ে ওই ছাত্রী যথেষ্ট মানসিক চাপে ছিলেন। যদিও আমরা মৃত্যুর সঠিক কারণ তদন্ত করে দেখছি।”

কুলদীপ সিং যাদব আরও বলেন, “আমরা বিষয়টি এম এস বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশে ওই ছাত্রীর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে তার মরদেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে।”

সহকারী পুলিশ কমিশনার অশোক রাতাভা জানান, এম এস বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যয়নরত এক বাংলাদেশি ছাত্রীর আত্মহত্যার খবর পেয়েই পুলিশের একটি দল সেই অ্যাপার্টমেন্টে পৌঁছায়। পরে রাওপুরা পুলিশ থানায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে হাতে লেখা একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে, সমস্ত ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) মোহনার পোস্টমর্টেম রিপোর্ট আসে, তাতে শ্বাসরোধের কারণে মারা গেছে বলে উল্লেখ করা হয়। সম্ভবত ঝুলে থাকার কারণে এই শ্বাসরোধ এবং মৃত্যু বলে মনে করা হচ্ছে।”

Link copied!