গাজায় ইসরায়েলি সামরিক হামলাকে অমানবিক বলেছে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর সেই কর্মকাণ্ডের ওপর নিষেধাজ্ঞাও দিয়েছে। তবে সেই নিষেধাজ্ঞা মানতে নারাজ ইসরায়েল। যে কারণে যুক্তরাষ্ট্র আর ইসরায়েলের সম্পর্ক নামতে নামতে অনেকটা তলানিতে।
এর মধ্যেই হামাসকে দেয়া যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরতির নিশ্চয়তার বিষয়টিও উপেক্ষা করেছেন ইসরায়েল নেতারা। ফলে যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনাও ক্ষীণ হতে শুরু করেছে। ঠিক এমন এক মুহূর্তে খবর পাওয়া গেল যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি গোলাবারুদের একটি চালান ইসরায়েলে পাঠানোর বিষয়টি থামিয়ে দিয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন। বাইডেন প্রশাসনের ঘনিষ্ট একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
চালানটি বিষয়ে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের এক মুখপাত্র বলেন, গত ৭ অক্টোবরের হামলার পর থেকে ইসরায়েলের জন্য নিরাপত্তা সহায়তা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ইসরায়েলকে জরুরি সহায়তা দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র সর্ববৃহৎ সম্পূরক বরাদ্দ পাস করেছে।
মুখপাত্র আরও বলেন, ইরানের হামলা থেকে ইসরায়েলকে রক্ষা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র একটি অভূতপূর্ব জোটের নেতৃত্ব দিয়েছে। ইসরায়েল যেসব হুমকির মুখোমুখি হচ্ছে, তা থেকে তারা যাতে নিজেদের রক্ষা করতে পারে, সেটি নিশ্চিতের জন্য যা যা করা দরকার, তা করতে থাকবে যুক্তরাষ্ট্র।
অন্য আরেকটি সূত্র বলছে, ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার রাফায় সম্ভাব্য ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের সঙ্গে বাইডেন প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের যোগসূত্র নেই। তা ছাড়া এই সিদ্ধান্ত ইসরায়েলে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য চালান পাঠানোর বিষয়টিকে প্রভাবিত করবে না।
সূত্রের খবরটি প্রথম প্রকাশ করে মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওস। যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা দাবি করছেন, ইসরায়েলের প্রতি মার্কিন নীতিতে কোনো পরিবর্তন আসেনি। তবে বাইডেন প্রশাসন কেন এমন সিদ্ধান্ত নিল, তা প্রকাশ করেনি সূত্র।
সূত্রমতে, গত মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন একটি বৈদেশিক সহায়তা বিলে সই করেন। এতে ইসরায়েল-হামাস সংঘাতকে কেন্দ্র করে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২৬ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে ১৫ বিলিয়ন ডলার ইসরায়েলের জন্য সামরিক সহায়তা। ৯ বিলিয়ন ডলার গাজার জন্য মানবিক সহায়তা। আর ২ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার অঞ্চলটিতে মার্কিন সামরিক কার্যক্রমের জন্য রাখা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত সাত মাস ধরে ইসরায়েল গাজায় হামলা চালাচ্ছে। এই হামলার মুখে গাজার বেশির ভাগ মানুষ উপত্যকাটির রাফায় আশ্রয় নিয়েছে। সেখানে ১০ লাখের বেশি ফিলিস্তিনি আছে। ইসরায়েল-হামাসের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি চুক্তির লক্ষ্যে বর্তমানে আলোচনায় যুক্ত আছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে এই আলোচনায় কোনো অগ্রগতি নেই।