• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিশ্বে ফোন, ল্যাপটপ, ওয়াকিটকি বিস্ফোরণের নতুন যুদ্ধ শুরু


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৪, ০৬:৩৬ পিএম
বিশ্বে ফোন, ল্যাপটপ, ওয়াকিটকি বিস্ফোরণের নতুন যুদ্ধ শুরু
পেজার বা ডিভাইস বিস্ফোরণ। ছবি: সংগৃহীত

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মারণাস্ত্রের ভয়াবহতা হতভম্ব হয়ে দেখেছে বিশ্ব। হিরোশিমা নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা হামলা এখনও সভ্যতার ইতিহাসে কলঙ্কজনক অধ্যায়। সেই যুদ্ধে আরেকটা মারাত্মক অস্ত্র ব্যবহার হয়েছিল, যার নাম ক্লাস্টার বোমা বা গুচ্ছ বোমা।

গুচ্ছ বোমার একটি ক্যানিস্টার (রকেটের মতো) বহন করতে পারে ১০ থেকে শুরু করে শত শত ছোট বোমা। যা বিমান, আর্টিলারি, নৌ, বন্দুক অথবা রকেট লঞ্চার থেকে নিক্ষেপ করা যায়।

যুদ্ধের ধারাবাহিকতায় সেই অস্ত্রের প্রয়োগ হয়েছিল ইরাক-মার্কিন যুদ্ধেও। চলমান ইউক্রেন যুদ্ধেও ক্লাস্টার বোমা ব্যবহার করার কথা শোনা গেছে। তবে এসব গতানুগতিক মারাত্মক যুদ্ধাস্ত্রের বদলে এবার অভিনব এক কৌশল প্রয়োগে বিশ্বকে হতভম্ব করে দিয়েছে ইসরায়েল।

লেবাননজুড়ে হাজার হাজার পেজার (তারবিহীন যন্ত্র) বিস্ফোরণ ঘটতে থাকে। প্রথম দিন মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) অসংখ্য পেজার বিস্ফোরণে প্রাণ হারায় অন্তত ১২ জন। আর প্রায় তিন হাজার মানুষ আহত ও ক্ষতবিক্ষত হয় বলে জানায় বার্তা সংস্থা এপি। অভিনব এই হামলার কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলেন না কেউ।

ঘোর কাটার আগেই পরদিন বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) লেবাননজুড়ে আরেক অভিনব ঘটনা ঘটতে থাকে। এবার একের পর এক ওয়াকিটকি, ল্যাপটপ, ওয়াকিটকি রেডিও, গাড়িতে বিস্ফোরণ ‍শুরু হয়। যেসব ঘটনায় প্রাণ হারান অন্তত ১৪ জন। আর আহত হন সাড়ে ৪ মানুষ।

বিভিন্ন স্থানে যুগপৎভাবে ডিভাইস বা যন্ত্রের বিস্ফোরণ ঘটে যেতে থাকে। বিস্ফোরিত সব ওয়াকিটকি, ল্যাপটপ, রেডিও এবং আগুন লেগে যাওয়া বিভিন্ন আবাসিক ভবনের ছবি লোকজন দ্রুত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করতে থাকেন।

বার্তা সংস্থা এপি জানায়, মঙ্গলবারের হামলায় নিহত তিন হিজবুল্লাহ সদস্য ও এক শিশুর জানাজায় বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এছাড়া লেবাননজুড়ে ওয়াকিটকির পাশাপাশি ল্যাপটপ, রেডিও, গাড়ি, এমনকি সোলার প্যানেলে বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে।

মূলত, হিজবুল্লাহ সদস্যদের ব্যবহার করা পেজারগুলোতেই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। ধারণা করা হচ্ছে, হিজবুল্লাহ সদস্যদের পেজারগুলোতে আগে থেকেই স্বল্প পরিমাণে হলেও শক্তিশালী বিস্ফোরক ভরা ছিল। অভিনব এই হামলায় ইসরায়েল জড়িত বলে দাবি করছেন বিশ্লেষকরা।

গাড়িতে রাখা ডিভাইস বিস্ফোরণে অগ্নিকাণ্ড

লেবাননজুড়ে হাজার হাজার ডিভাইস বিস্ফোরণের ঘটনাকে যুদ্ধের নতুন যুগ হিসেবে উল্লেখ করছে ইসরায়েল। তারা বলছে, “এই যুদ্ধের নতুন যুগে প্রবেশ করছি। এর সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিতে হবে।”

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গ্যালান্ট যখন উত্তর ইসরায়েলের এক বিমান ঘাঁটি পরিদর্শন করছিলেন, তখন বলেন, “নতুন যুগে পা রাখছে এই যুদ্ধ।” এর সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার কথাও বলেন। তার এই বক্তব্যের মাধ্যমে হামলায় সম্পৃক্ততার ব্যাপারটি স্বীকার’ করল ইসরায়েল।

ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা শিনবেত ও জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদকে নিয়ে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) তৎপরতার প্রশংসা করেন মন্ত্রী। বলেন, “আমরা দারুণ সুফল পেয়েছি।”

Link copied!