হামাসের হামলার জের ধরে ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ শুরু হয়েছে গেল বছরের অক্টোবরে। সেই তখন থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের সেরা সব বিশ্ববিদ্যালয়ে তর্ক-বিতর্কের চর্চা থেকে শুরু করে যুদ্ধের পক্ষে-বিপক্ষে বিক্ষোভ বাড়তেই থাকে। পক্ষের আর বিপক্ষের শিক্ষার্থীদেরই দাবি, যুদ্ধের জের ধরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ইহুদি-বিদ্বেষ আর ইসলামভীতি দুইটাই বেড়েছে।
গাজা যুদ্ধের প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া ও ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হওয়া শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ এখন অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও ছড়িয়ে পড়েছে। আর ক্রমবর্ধমান বিক্ষোভ সামাল দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কর্মকর্তারা।
এমনকি বিক্ষোভ থামাতে সোমবার (২২ এপ্রিল) ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েক ডজন শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের এই খবর ছড়িয়ে পড়লে যুক্তরাষ্ট্রের আরও কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে। বিক্ষোভকারীদের অনেকেই সামরিক অস্ত্র তৈরি খাতে বিনিয়োগ কমানোর আহ্বান জানান।
অন্যদিকে, ইহুদিবিদ্বেষ ছড়িয়ে পড়ার ভয়ে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যায় ক্যাম্পাসে সশরীরে ক্লাস নেওয়া বন্ধ রাখা হয়েছে। বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ক্যালিফোর্নিয়ার বার্কলেসহ অন্যান্য কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ-প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়েছে।
বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়া মার্কিন অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে রয়েছে- ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, ইউনিভার্সিটি অব মিশিগান, ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি এবং এমারসন কলেজ। কলম্বিয়ার প্রায় ১২ কিলোমিটার দক্ষিণে নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছে।
অন্যান্য কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরাও ইসরায়েলি অস্ত্র সরবরাহকারী কোম্পানিগুলো থেকে বিনিয়োগ সরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
অবশ্য এসব বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে ইহুদি-বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগও রয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত একটি ভিডিও পোস্টে কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে ইসরায়েলে হামাসের আক্রমণের প্রতি সমর্থন জানাতেও দেখা গেছে। যদিও ইহুদি বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিক্ষোভকারীরা। তারা বলছেন যে, তাদের প্রতিবাদ ও সমালোচনা কেবল ইসরায়েল রাষ্ট্রের কার্যক্রমের বিরুদ্ধে।