হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি নিহত হওয়ার পর অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট বেছে নিয়েছে ইরান। দেশটির সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ গার্ডিয়ান কাউন্সিল সোমবার (২০ মে) এ পদে ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোখবারের নাম জানিয়েছে।
কাউন্সিলের মুখপাত্র হাদি তাহান নাজিফ আজ এক সাক্ষাৎকারে জানান, সংবিধান মেনে সর্বোচ্চ নেতার অনুমোদনের ভিত্তিতে বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেবেন।
হাদি তাহান নাজিফ আরও বলেন, সর্বোচ্চ ৫০ দিনের মধ্যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আয়োজনের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা আছে। এখন সর্বোচ্চ নেতার অনুমতি নিয়ে ইরানের বিচার বিভাগের প্রধান, পার্লামেন্টের স্পিকার ও ভাইস প্রেসিডেন্টকে সঙ্গে নিয়ে গার্ডিয়ান কাউন্সিল নির্বাচন আয়োজনের ব্যবস্থা করবে।
ইরানের সংবিধানে বলা আছে, ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট মারা গেলে বা কোনো কারণে দায়িত্ব পালনে সক্ষম না হলে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নেবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট। পরবর্তী ৫০ দিনের মধ্যে নতুন নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে এবং নতুন প্রেসিডেন্ট বেছে নিতে হবে। নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব সামলাবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট।
২০২১ সালের আগস্টে ইরানের প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন ইব্রাহিম রাইসি। এর পরপর খামেনির অনুমতি নিয়ে মোহাম্মদ মোখবারকে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।
তার আগে মোহাম্মদ মোখবার ইরানের খুজেস্তান প্রদেশের গভর্নর এবং ইরানের সিতাদের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ১৪ বছর দায়িত্ব পালন করেছেন। এটা ইরানের অন্যতম শক্তিশালী একটি অর্থনৈতিক কনগ্লোমারেট (একটি করপোরেট প্রতিষ্ঠানের অধীন থাকা বিভিন্ন শিল্পগোষ্ঠী)।
গতকাল রোববার আজারবাইজানের সীমান্তবর্তী এলাকায় দুই দেশের যৌথভাবে নির্মিত একটি বাঁধ উদ্বোধন করতে গিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট রাইসি। সেখানে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভও ছিলেন।
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি নিহত হওয়ার ঘটনায় পাঁচদিনের শোক ঘোষণা করেছেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি।
এ ছাড়া রাইসির মর্মান্তিক মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। অন্যদিকে ইরানি প্রেসিডেন্টের মৃত্যুর ঘটনায় গভীর সমবেদনা এবং সহানুভূতি প্রকাশ করে শোক পালনের কথা জানিয়েছে পাকিস্তান।
সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া এক পোস্টে মোদি লিখেছেন, ‘ইব্রাহিম রাইসির পরিবার এবং ইরানের জনগণের প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা। ভারত এই দুঃখের সময়ে ইরানের পাশে আছে।’