বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনাসহ সব বাংলাদেশিকে ভারত থেকে বের করে দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির হিন্দুত্ববাদী দল শিবসেনার সংসদ সদস্য সঞ্জয় রাউত।
সম্প্রতি বলিউড তারকা সাইফ আলি খানের ওপর হামলাকারী একজন ‘বাংলাদেশি’ বলে মুম্বাই পুলিশ সন্দেহ পোষণ করার পর এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে সঞ্জয় রাউত এ কথা বলেন।
সাইফ আলী খানের ওপর হামলাকারী সম্পর্কে প্রশ্ন রেখে সঞ্জয় রাউত বলেন, “কে বলেছে হামলাকারী বাংলাদেশি? বিজেপি? তারা দাবি করছে, সাইফ আলি খানের ওপর হামলা একটি আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র। আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রটা আসলে কী?”
সঞ্জয় রাউত বলেন, “একজন অভিনেতার ওপর হামলা হয়েছে। জনগণকে সত্যটা বলা উচিত। যদি তিনি (হামলাকারী) বাংলাদেশি হন, তাহলে এর জন্য দায়ী কেন্দ্রীয় সরকার। এটা অমিত শাহের দায় এবং এ জন্য তার পদত্যাগ করা উচিত।”
তিনি আরও বলেন, “সব বাংলাদেশিকে (ভারত থেকে) বের করে দেওয়া উচিত। আর এটা শুরু হওয়া উচিত শেখ হাসিনাকে দিয়ে। যাতে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। তারা শুধুই আতঙ্ক সৃষ্টি করছেন। এর কারণ, মুম্বাই মিউনিসিপ্যাল নির্বাচন। যখনই আমরা পার্লামেন্টে বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে কথা বলতে চাই, তখনই বিজেপি আমাদেরকে থামিয়ে দেয়। এক্ষেত্রে তারা আন্তর্জাতিক সম্পর্কের কথা বলে। ১০ দিন আগে তারা লাভ জিহাদের অভিযোগে অভিযুক্ত করেছে সাইফ আলি খানকে। আর এখন তারা তাকেই নিয়ে উদ্বিগ্ন।”
সাইফ আলি খান প্রসঙ্গে শিবসেনার সংসদ সদস্য আরও বলেন, “সাইফ আলি খানের ছেলের নাম তৈমুর। তাদের (বিজেপি) লোকজন তাকে নিয়েও বাজে সব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এসব তথ্য পেয়েছেন। এখন তৈমুর হয়ে উঠেছে তাদের ভালোবাসার প্রতীক।”
উল্লেখ্য, বলিউড তারকা সাইফ আলি খানের ওপর হামলা হয় গত ১৬ জানুয়ারি। ওইদিন বান্দ্রায় তার বাড়িতে হামলা চালানো হয়। এ সময় তার ঘাড়ে ও মেরুদণ্ডে ছুরিকাঘাত করা হয়। মুম্বাই পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম শেহজাদ নামের এক যুবককে আটক করে রিমান্ডে নিয়েছে।
পুলিশ বলেছে, তার বাড়ি বাংলাদেশের ঝালকাঠিতে। পুলিশের দেওয়া বিবৃতি অনুযায়ী, শেহজাদ চুরি করার উদ্দেশে সাইফ আলি খানের বাসভবনে প্রবেশ করেন। কিন্তু বাড়িতে সাইফ আলি খান উপস্থিত থাকায় তাকে ছুরিকাঘাত করেন শেহজাদ। এতে তিনি মারাত্মকভাবে আহত হন। হামলাকারীর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় মামলা হয়েছে।
এদিকে শরিফুল ইসলাম শেহজাদ (৩১) নিজেকে বিজয় দাস নামে পরিচয় দিতেন। তার কাছে ভারতীয় নাগরিকত্বের বৈধ কোনো প্রমাণ ছিল না।
তবে তার আইনজীবী সংবাদমাধ্যমের কাছে দাবি করেন, শরিফুল ইসলাম বাংলাদেশি কিনা, পুলিশের কাছে তার কোনো প্রমাণ নেই। তার মক্কেল ওই এলাকায় গত সাত বছর ধরে বাস করছেন।
শরিফুলের নাগরিকত্ব নিয়ে তার আইনজীবী সন্দীপ শেখানে বলেন, আদালত তার মক্কেলের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। তবে শরিফুল বাংলাদেশি- এমন কোনো তথ্য আদালতকে দিতে পারেনি পুলিশ। তাদের দাবি, শরিফুল ছয় মাস ধরে মুম্বাইয়ে রয়েছে সেটিও মিথ্যা। শরিফুল সাত বছর ধরে মুম্বাইয়ে বসবাস করছেন। তার পরিবারও এখানে রয়েছে।
সেই সঙ্গে পুলিশের তদন্ত সঠিকভাবে হচ্ছে না বলেও দাবি করেন এই আইনজীবী।
সূত্র: এএনআই