হিন্ডেনবার্গের প্রতিবেদনে টালমাটাল অবস্থা ভারতের ব্যবসায়ী গৌতম আদানির। ক্রমাগত পড়ছে আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারের দর। দ্রুত সম্পদ হারিয়ে এক সপ্তাহে বিপুল ক্ষতির মুখে পড়েছেন ভারতের সাম্প্রতিক সময়ের প্রভাবশালী এ ব্যবসায়ী।
সম্পদ হারিয়ে বিশ্বের ধনী ব্যক্তির তালিকার শীর্ষ ৩ থেকেও পতন হয় আদানির। ফোর্বসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী বৃহস্পতিবার এই তালিকায় আদানির অবস্থান ১৬ নম্বরে।
বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) দেশটির কেন্দ্রীয় বাজেট পেশের দিনেই নতুন শেয়ার ছাড়ার প্রক্রিয়া (এফপিও) বাতিল করে দেয় আদানি গোষ্ঠী। ২০ হাজার কোটি টাকার ওই এফপিও বাতিলের পর তাদের শেয়ারের দর আরও নেমে গিয়েছে।
ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়, এক সপ্তাহে সব মিলিয়ে আদানিদের ক্ষতির পরিমাণ আকাশছোঁয়া। প্রায় ৮ লক্ষ ২২ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে গৌতম আদানি পরিচালিত শিল্পগোষ্ঠীর।
এফপিও বাতিলের পর বৃহস্পতিবারের পরিসংখ্যান বলছে, নতুন করে শুধু আদানি গোষ্ঠীর মূল সংস্থা ‘আদানি এন্টারপ্রাইসেস’-এর শেয়ারের দর পড়েছে ১০ শতাংশ।
যদিও বৃহস্পতিবার দিনের শুরুতে ‘আদানি এন্টারপ্রাইসেস’-এর শেয়ারের দর ঊর্ধ্বমুখী ছিল। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দর পড়তে শুরু করে। গত ৯ দিনে ‘আদানি এন্টারপ্রাইসেস’-এর শেয়ারের দাম ৩৮ শতাংশ কমেছিল।
আদানি গোষ্ঠীর অন্য সংস্থাগুলির শেয়ারের দামও বৃহস্পতিবার কমেছে অনেকটা। ‘আদানি টোটাল গ্যাস’, ‘আদানি পোর্টস অ্যান্ড সোশ্যাল ইকোনমিক জোন’, ‘আদানি গ্রিন এনার্জি’ এবং ‘আদানি ট্রান্সমিশন’-এর শেয়ারের দাম ১০ শতাংশ করে কমেছে।
২৪ জানুয়ারি থেকে ১ ফেব্রুয়ারি, শেষ ৯ দিনে এই সংস্থাগুলির শেয়ারের দর কমেছে যথাক্রমে ৫১ শতাংশ, ৩৫ শতাংশ, ৪০ শতাংশ এবং ৩৭ শতাংশ। ‘আদানি পাওয়ার’ এবং ‘আদানি উইলমার’-এর শেয়ারের দাম বৃহস্পতিবার নতুন করে পড়েছে ৫ শতাংশ করে। গত ৯ দিনে তাদের শেয়ারের দাম কমেছিল ২৩ শতাংশ করে।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ইতিমধ্যে রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার দেশটির অন্য ব্যাংকগুলির কাছে ঋণের পরিসংখ্যান চাওয়া হয়েছে। আদানি গোষ্ঠীকে কোন ব্যাংক কত টাকা ধার দিয়েছে, তার খুঁটিনাটি তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আমেরিকার লগ্নি সংক্রান্ত গবেষণাকারী সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ গত সপ্তাহে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে আদানিদের বিরুদ্ধে কারচুপির অভিযোগ এনেছে। তার পর থেকেই ধস নেমেছে শেয়ার বাজারে।
হিন্ডেনবার্গ তাদের রিপোর্টে বলা হয়েছে, কারচুপির মাধ্যমে ধনী হয়েছেন আদানিরা। তারা কৃত্রিম ভাবে তাদের শেয়ারের দর বাড়িয়েছেন। এভাবে শেয়ার বাজারে লগ্নিকারীদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে।