দক্ষিণ আমেরিকার দেশ চিলিতে ভয়াবহ দাবানলে এখন পর্যন্ত ৯৯ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া সেখানে এখনো শত শত মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। বিপর্যয়কর পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশটির প্রেসিডেন্ট গ্যাব্রিয়েল বোরিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন।
সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, চিলির ভালপারাইসো অঞ্চলে বনের দাবানলে অন্তত ৯৯ জন নিহত হয়েছেন বলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট গ্যাব্রিয়েল বোরিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেছেন, পরিস্থিতি মোকাবিলায় ‘প্রয়োজনীয় সবকিছুর’ ব্যবস্থা করবেন তিনি।
এদিকে রেকর্ড রাখা শুরুর পর থেকে এটিকে চিলির সবচেয়ে মারাত্মক দাবানল বলে মনে করা হচ্ছে। দাবানলে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে অনেকেই গ্রীষ্মের ছুটি কাটাতে উপকূলীয় অঞ্চলে বেড়াতে এসেছিলেন। এ ছাড়া চিলির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ভালপারাইসোতে স্বাস্থ্য সতর্কতাও জারি করেছে।
বিবিসি বলছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ইলেকটিভ সার্জারি স্থগিত করার এবং অস্থায়ী ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপনের অনুমোদনও দিয়েছে। মন্ত্রণালয় একই বিবৃতিতে জানিয়েছে, বিপর্যয়কর পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্বাস্থ্য পরিষেবার ওপর চাপ কমাতে সাহায্য করার জন্য পড়াশোনার শেষের দিকে থাকা মেডিকেল শিক্ষার্থীদেরও কাজে লাগানো হবে।
এদিকে দাবানল ছড়িয়ে পড়ার পর উদ্ধার পরিষেবাগুলো সবচেয়ে খারাপভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পৌঁছানোর জন্য লড়াই করছে এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যারোলিনা তোহা বলেছেন, আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মৃতের সংখ্যা ‘অনেক বেশি বাড়বে’।
এই পরিস্থিতিতে চিলির সরকার জনগণকে দাবানলে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ভ্রমণ না করার আহ্বান জানিয়েছে। এল অলিভারের ৬১ বছর বয়সী এক বাসিন্দা এই দাবানলকে ‘নরক’ বলে বর্ণনা করেছেন।
বার্তা সংস্থা এএফপির সঙ্গে কথা বলার সময় রদ্রিগো পুলগার নামের ওই ব্যক্তি বলেন, তিনি তার প্রতিবেশীকে সাহায্য করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু পরে বুঝতে পারেন, দাবানলে তার নিজের বাড়িটিও জ্বলতে শুরু করেছে। তিনি আরও বলেন, “আমাদের ওপর ছাই বৃষ্টি হচ্ছিল।”
চিলির আবাসন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আগুনে ৩ হাজার থেকে ৬ হাজার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া দাবানল ছড়িয়ে পড়ার পর গত শনিবার ভিনা ডেল মার, লিমাচে, কুইলপু এবং ভিলা আলেমনায় কারফিউও জারি করা হয়।