আফগানিস্তান ও সিরিয়া থেকে আগত ৯২ অবৈধ অভিবাসীকে বিবস্ত্র অবস্থায় উদ্ধার করেছে গ্রিস কর্তৃপক্ষ। বিবিসি জানায়, এ লজ্জাজনক ঘটনার জন্য গ্রিস-তুরস্ক একে অপরকে দোষারোপ করছে।
জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা এ ঘটনাকে অত্যন্ত বেদনাদায়ক বলে উল্লেখ করেছে এবং নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছে।
গ্রিস অভিযোগ করেছে, তুরস্কের সেনারা এই অভিবাসীদের গ্রিসের দিকে ঠেলে দিয়েছে। তাদের মতে, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সঙ্গে করা তুরস্কের ২০১৬ সালের চুক্তি অনুসারে তুরস্কের উচিত এই অবৈধ অভিবাসীদের ঠাঁই দেওয়া। গ্রিস বলছে এই উদারতার জন্য ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের পক্ষ থেকে তুরস্ক প্রতিবছর লাখ লাখ ডলার গ্রহণ করে।
গ্রিস-তুরস্ক সীমান্তে এই অবৈধ অভিবাসীদের বিবস্ত্র অবস্থায় পাওয়ার ঘটনাটির জন্য সম্পূর্ণ দায় তুরস্ককে নিতে হবে বলে জানিয়েছে গ্রিস।
গ্রিস পুলিশ জানিয়েছে, তারা ৯২ জন পুরুষ অভিবাসীকে বিবস্ত্র অবস্থায় উদ্ধার করেছে। তাদের মধ্যে কয়েকজন আহত ছিল। শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) তাদের উদ্ধার করার পর তৎক্ষণাৎ খাবার ও পোশাকের ব্যবস্থা করে গ্রিস কর্তৃপক্ষ।
ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের বর্ডার এজেন্সি এক তদন্ত প্রতিবেদনে জানায়, তুরস্ক থেকে রাবারের নৌকায় করে এই মানুষগুলো এভরস নদী পাড়ি দিয়ে গ্রিস সীমান্তে পৌঁছায়।
তবে তারা কীভাবে তাদের বস্ত্র হারিয়েছে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়নি।
তুরস্ক গ্রিসের অভিযোগকে মিথ্যা ও বানোয়াট বলে অভিহিত করেছে। এ ঘটনায় গ্রিসের বক্তব্যকে মিথ্যাচার হিসেবে উল্লেখ করে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেন, “গ্রিসের ভুয়া সংবাদ প্রচারের মেশিন আবার চালু হয়ে গেছে।”
তুরস্ক এই অমানবিক অবস্থার জন্য গ্রিসকেই দায়ী করেছে। তারা বলছে, বিবস্ত্র এই মানুষগুলোর ছবি তুলে এবং তা প্রচার করে অভিবাসীদের অসম্মান করেছে গ্রিস।
মূলত যুদ্ধ ও দারিদ্র্যের অভিঘাতে বিপর্যস্ত সিরিয়া, ইরাক ও আফগানিস্তানের নাগরিকরা নিরাপদ জীবনের আশায় পাড়ি জমাতে চায় ইউরোপে। তবে সেখানে পৌঁছাতে তাদের যেতে হয় তুরস্কের মধ্য দিয়ে এবং পার হতে হয় ইজিয়ান সাগর। এই পথে যাত্রায় নৌকা ডুবে প্রতিনিয়তই মারা যান শত শত অভিবাসীপ্রত্যাশী।