• ঢাকা
  • রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কাদের ও আসাদুজ্জামানের ওপর নিষেধাজ্ঞার দাবি ৬ মার্কিন কংগ্রেস সদস্যের


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ১০, ২০২৪, ০২:২০ পিএম
কাদের ও আসাদুজ্জামানের ওপর  নিষেধাজ্ঞার দাবি ৬ মার্কিন কংগ্রেস সদস্যের
ওবায়দুল কাদের ও আসাদুজ্জামান। ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ক্ষমতাচ্যুত সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছেন ছয় কংগ্রেস সদস্য।

বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ ও এর ধারাবাহিকতায় ছাত্র–জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতন, মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ সাম্প্রতিক ঘটনাবলি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ও অর্থমন্ত্রী ইয়েলেনকে লেখা চিঠিতে এ আহ্বান জানিয়েছেন ছয়জন কংগ্রেস সদস্য।

বাংলাদেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিষয়ে কংগ্রেস সদস্যরা বলেছেন, আন্দোলনে বেশির ভাগ সহিংসতার জন্য দায়ী দুই বাহিনী—পুলিশ ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে এর দায়ভার আসাদুজ্জামান খানের। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা করতে ছাত্রলীগকে পাঠান। সেই সঙ্গে ‘দেখামাত্র গুলি’ করার নির্দেশ দেন।

গত বুধবার (৭ আগস্ট) লেখা এ চিঠিতে কংগ্রেসের উভয় কক্ষ—সিনেট ও প্রতিনিধি পরিষদের সদস্যরা শেখ হাসিনা সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানান। এসব ঘটনা বিস্তৃত পরিসরে ভিন্নমতাবলম্বীদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের চালানো দমনপীড়নেরই অংশ। নিজেদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় দলটির নেতাদের জবাবদিহির আওতায় আনা হয়নি। যদিও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন, তবু তাদের জবাবদিহির প্রয়োজনীয়তা রয়ে গেছে।

চিঠিতে আরও বলা হয়, সরকারি চাকরিতে অন্যায্য কোটাব্যবস্থার প্রতিবাদে শুরু হওয়া শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ দমনে গত ১৫ জুলাই পুলিশ ও আধা সামরিক বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করে আওয়ামী লীগ। পরবর্তী সপ্তাহজুড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অসঙ্গতিপূর্ণ ও বেআইনি বলপ্রয়োগ করে। ছোড়ে রাবার বুলেট, ছররা গুলি, সাউন্ড গ্রেনেড, কাঁদানে গ্যাসের শেল ও তাজা গুলি।

চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ১৫ জুলাই সহিংস দমনাভিযানের পর শেখ হাসিনা দেশজুড়ে কারফিউ জারি করেন। বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট যোগাযোগ। জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদ এটিকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের লঙ্ঘন বলে মনে করে। আন্দোলনে বেশির ভাগ সহিংসতার জন্য দায়ী দুই বাহিনী—পুলিশ ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে এর দায়ভার আসাদুজ্জামান খানের।

এমন প্রেক্ষাপটে ‘গ্লোবাল ম্যাগনিটস্কি হিউম্যান রাইটস অ্যাকাউন্টিবিলিটি অ্যাক্ট’সহ প্রয়োগ উপযোগী সব আইনের আওতায় ওবায়দুল কাদের ও আসাদুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্টভাবে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার আহ্বান জানান কংগ্রেস সদস্যরা।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে থাকা নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস জরুরিভিত্তিতে বিশ্বনেতাদের প্রতি বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। এই আইনপ্রণেতারা বলেন, ‘র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আরোপ বাংলাদেশে বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধে সফলতা এনেছে। তবে, বর্তমান বাস্তবতায় এটাই যথেষ্ট নয়।

চিঠিতে বলা হয়, ওবায়দুল কাদের ও আসাদুজ্জামানের ওপর সুনির্দিষ্টভাবে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে প্রয়োগযোগ্য সব ক্ষমতা খাটিয়ে আওয়ামী লীগের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় শক্ত জবাব দেওয়ার আহ্বান জানাই আমরা। ব্যাপকভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রের আইনের আওতায় পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।

চিঠিতে স্বাক্ষরকারী কংগ্রেস সদস্যরা হলেন, লয়েড ডগেট, এডওয়ার্ড জে মার্কি, উইলিয়াম আর কিটিং, ক্রিস ভন হলেন, জেমস পি ম্যাকগভার্ন ও অল গ্রিন। সূত্র: প্রথম আলো। 

Link copied!