ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর (ডিআর কঙ্গো) উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় এলাকায় ‘অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের (আইডিপি) ক্যাম্পে সন্ত্রাসীদের হামলায় ৪৫ জন নিহত হয়েছেন। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, গত রোববার সন্ধ্যা থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত এই হামলার ঘটনা ঘটে এবং কো-অপারেটিভ ফর দ্য ডেভেলপমেন্ট অব কঙ্গো বা কোডেকো নামে পরিচিত একটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর যোদ্ধারা এই হামলা চালিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। হামলার সময় যোদ্ধারা ডজুগু অঞ্চলের লালা শিবিরে ঝুঁকিপূর্ণ বাস্তুচ্যুত লোকদের গণহত্যা করেছে।
হামলার স্থানটি জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা ঘাঁটি থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার বা ৩ মাইল দূরে অবস্থিত। কোডেকো দাবি করে, তারা লেন্দু নামক সম্প্রদায়কে হেমা নামের অন্য জাতিগোষ্ঠী এবং সেই সঙ্গে কঙ্গোর সেনাবাহিনী থেকে রক্ষা করবে।
এদিকে এক বিবৃতিতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছে।
এতে বলা হয়েছে, এ হামলা আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘন এবং শান্তিরক্ষা মিশন মনে করে, বেসামরিক জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃত এই ধরনের আক্রমণ যুদ্ধাপরাধ হতে পারে।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, হামলার পর তিনি মাটিতে ‘৪০টির বেশি মৃতদেহ’ পড়ে থাকতে দেখেছেন। রাতে পালিয়ে গিয়ে তিনি বেঁচে যান বলেও জানান তিনি।
স্থানীয় নাগরিক অধিকার গোষ্ঠীর প্রধান চারিট বানজা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, নিহতদের গণকবরে দাফন করা হবে। ইতুরিতে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সংলাপের কয়েক দিন পরে এই হামলার ঘটনাটি ঘটেছে।
তিনি বলেন, “আমাদের এখানে নিরাপত্তা নেই। আমরা এটি প্রতিদিনই বলি। রক্তাক্ত এই হামলা ঠিক কী কারণে চালানো হয়েছে, তা এখনো জানানো হয়নি।”
দেশটিতে কোডেকো গোষ্ঠী প্রায়ই বাস্তুচ্যুত মানুষের শিবিরগুলোতে হামলা চালিয়ে থাকে। গত বছর তারা বুলের কাছে আরেকটি শিবিরে প্রায় ৬০ জনকে হত্যা করেছিল। মূলত কঙ্গোর উত্তরে উগান্ডা সীমান্তের কাছেই অবস্থিত ইতুরি প্রদেশ। উত্তর কঙ্গোর এই অঞ্চলটি বরাবরই উত্তেজনাপ্রবণ। সেখানে একাধিক চরমপন্থি ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠী এখানে সক্রিয়।