মিয়ানমারের সেনাবাহিনী দেশটির ঐতিহ্যবাহী নববর্ষ উপলক্ষে ৯৮ জন বিদেশীসহ ৩ হাজার ১১৩ জন বন্দীকে মুক্তি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। যদিও ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের প্রতিবাদে কারাবন্দীদের মুক্তি দেওয়া হবে কিনা সে বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।
সোমবার (১৭ এপ্রিল) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। এতে বলা হয়, সোমবার দেশটির সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সেনাবাহিনীর একজন মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল অং লিন ডুয়ে বলেছেন, “নববর্ষ উদযাপনে মানুষের মধ্যে আনন্দ বয়ে আনতে এবং মানবিক উদ্বেগের সমাধান করার জন্য সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছে। তবে যারা পুনরায় অপরাধ করবে, তাদের অতিরিক্ত শাস্তির সঙ্গে বাকি সাজাও ভোগ করতে হবে।”
২০২০ সালের নির্বাচনে ব্যাপক জালিয়াতির মাধ্যমে এনএলডি ক্ষমতা আসে বলে সেনাবাহিনী দাবি করলেও কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি। পরে এই অভিযোগে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সু চি নেতৃত্বাধীন সরকারকে হটিয়ে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী।
দেশটি শান্তিতে নোবেলজয়ী ৭৭ বছর বয়সের সু চিকে বিভিন্ন মামলায় ৩৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে সামরিক আদালতে।
তার সমর্থকরা বলছেন, এসব মামলা ও সাজা তাকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে জান্তার দুরভিসন্ধি। নির্বাচনে বড় ধরনের কারচুপি ও জালিয়াতির অভিযোগ তুলে অভ্যুত্থানকে ন্যায্যতা দেওয়ার চেষ্টা করেছে সামরিক বাহিনী। তবে স্বাধীন নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা বড় ধরনের কোনো অনিয়মের অভিযোগ তুলেননি।
এর আগেও ২০২২ সালের ১৭ এপ্রিল ৪২ জন বিদেশীসহ ৬১৯ বন্দীকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। তবে এসব বন্দী জান্তা বিরাধী বিক্ষোভকারী নাকি সাধারণ আসামি তা নিয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু বলা হয়নি।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকে এখন পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সহিংসতায় ৩ হাজার ১০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। এছাড়া একই সময়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে আরও ২০ হাজারের বেশি মানুষকে।