বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য। ঘূর্ণিঝড়ে অসংখ্য বাড়িঘর, সড়ক ও বিদ্যুৎ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
দেশটির উত্তর-পশ্চিম মিয়ানমারে উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতায় কাজ করা জাতিসংঘের একটি মানবিক গোষ্ঠী জানিয়েছে দেশটিতে ঘূর্ণিঝড় মোখায় ‘শত শত’ লোক নিহত হয়েছে এবং কিছু রোহিঙ্গা শিবির ধ্বংস হয়ে গিয়েছে।
ইউনাইটে নেশনস অফিস ফর দ্য কোঅর্ডিনেশন অব হিউম্যানটারিয়ান অ্যাফেয়ার্স (ইউএনওসিএইচএ) জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় মোখা দেশটিতে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। এতে শত শত নাগরিক নিহত হয়েছেন।
সোমবার (১৬ মে) সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
এদিকে মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতী জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৯ জনে দাঁড়িয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মোখা বাংলাদেশের কক্সবাজার এবং মায়ানমারের সিত্তওয়ে শহরে ঘণ্টায় ১৯৫ কিলোমিটার (১২০ মাইল) গতিবেগে আঘাত হানে। যা দেশটিতে গত এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়।
জান্তার ভয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে দেশটির রোহিঙ্গা শিবিরের এক নেতা বলেন, সিত্তওয়ের উত্তর-পশ্চিম খাউং ডোকের কার গ্রামে মোখার তাণ্ডবে অন্তত ২৪ জন মারা গেছেন। নিচু এলাকার রোহিঙ্গা গ্রাম ও আইডিপি ক্যাম্পে আরও কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছেন।
মোখার কারণে কতজনের মৃত্যু হয়েছে এবং কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, এ বিষয়ে তথ্য লুকোচুরি করছে মিয়ানমার সামরিক সরকার। দেশটির মিডিয়ার ওপরও ব্যাপক বিধিনিষেধ রয়েছে এসব খবর প্রকাশে।
এএফপি ফুটেজে দেখা গেছে, কাঠের মাছ ধরার নৌকাগুলো ঝড়ে ভেঙে গিয়ে তীরের কাছে স্তূপ হয়ে রয়েছে।
এর আগে সামরিক সরকার বিশদ বিবরণ না দিয়ে জানিয়েছিল, ঘূর্ণিঝড়ে অন্তত ৫ জন মৃত্যু হয়েছে। আহতও হয়েছেন কয়েকজন।
এতে বলা হয়েছে, সিত্তওয়েতে এখন পর্যন্ত সাড়ে ৮৬০ ঘর ও ১৪টি হাসপাতাল বা ক্লিনিক ব্যাপক আকারে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সাইক্লোন ট্র্যাকারের তথ্যানুযায়ী, রাখাইন রাজ্যের সিত্তওয়ে শহরের সঙ্গে এখনও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। শহরটিতে প্রায় দেড় লাখ মানুষের বসবাস।