ভয়াবহ বায়ুদূষণে বিপর্যস্ত গোটা দেশ। দূষণ আর ধোঁয়ার কারণে প্রতিমুহূর্তে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। শ্বাসকষ্টের উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালগুলোতে শিশু আর বয়স্কদের উপচে পড়া ভিড়।
পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে, একদিনেই অসুস্থ হয়ে শহরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে অন্তত ১৫ হাজার মানুষ। এমন অবস্থায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আগামী তিন মাসের মধ্যে কোনো ধরনের বিয়ের অনুষ্ঠান আয়োজনে কঠোর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার।
বায়ুদূষণের এই বিপর্যয়ের ঘটনাটা মূলত পাকিস্তানে। দেশটিতে সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে লাহোর। যে শহরে বাতাসের গুণগত মান (একিউআই) ১৯০০। যা অতি অতি ভয়ঙ্কর।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলির প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, পাকিস্তানজুড়ে শুকনো কাশি, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া ও বুকে সংক্রমণের মতো উপসর্গ হু হু করে বাড়ছে। এসব উপসর্গ নিয়ে হাজার হাজার রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। যার মধ্যে সরকারি হাসপাতালের অবস্থা আরও খারাপ। মেয়ো হাসপাতালে ৪০০০, জিন্নাহ হাসপাতালে ৩৫০০, গঙ্গারাম হাসপাতালে ৩০০০ এবং শিশু হাসপাতালে ২০০০ রোগী ভর্তি হয়েছে।
চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ আশরফ জিয়া লাহোরের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, সরকারের এখনই উচিত দূষণের উৎসগুলিকে চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা।
ইতোমধ্যেই লাহোরে ইটভাটার কাজ, নির্মাণ সংক্রান্ত কাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। যানবাহন চলাচলের ওপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে। বিশেষ করে ব্যক্তিগত গাড়ি রাস্তায় না নামানোর জন্য শহরবাসীর কাছে আবেদন করছে প্রশাসন।
অন্যদিকে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না পর্যন্ত স্কুল, কলেজ বন্ধ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিয়ে-সাদির অনুষ্ঠানের ওপরেও তিন মাসের জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। প্রশাসন বলছে, বিয়ের অনুষ্ঠানে শব্দবাজি, আতসবাজি পোড়ানো হয় দেদার। এতে বায়ুদূষণের মাত্রা বেড়ে যায়।
পাঞ্জাব প্রদেশে গেল এক মাসে ২০ লাখ শ্বাসকষ্টের রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ‘ডন’-এর প্রতিবেদন বলছে, পঞ্জাব প্রদেশে গত এক মাসে দূষণের কারণে হাসপাতালে রোগী ভর্তির সংখ্যা ১৯ লাখ ৩৪ হাজার ৩০ জন।