জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় ইসরায়েলকে নিন্দা জানিয়ে একটি চিঠিতে স্বাক্ষর করেছে ইউরোপ, আফ্রিকার দেশগুলোসহ বিশ্বের ১০৪টি দেশ। ওই চিঠিতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বেশির ভাগ দেশ সই করলেও যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও ভারত সই করেনি। এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি চিঠিতে ভারতের সই না করা নিয়ে চলছে বিতর্ক।
রোববার (১৩ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু।
ওই চিঠিতে সই না করায় ভারত সরকারের এমন পদক্ষেপের সমালোচনা করেছে বিরোধী দল কংগ্রেস। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশ বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এমন অবস্থান নিতে নির্দেশ দিয়েছেন, তা ‘রহস্যময়’। এটি অবশ্যই লজ্জাজনক।”
কংগ্রেস নেতা পি চিদাম্বরম বলেন, “ভারত কেন এমন একটি চিঠিতে সই করল না, তার কোনো ব্যাখ্যা নেই। জাতিসংঘ মহাসচিবের প্রবেশাধিকারে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ইসরায়েল চরম ভুল করেছে। ভারতের উচিত ছিল এর নিন্দা জানানো।”
এর আগে চলতি মাসের শুরুতে জাতিসংঘ মহাসচিবের ইসরায়েলে প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। এতে ইসরায়েলের সমালোচনায় সরব হয়ে ওঠে গোটা বিশ্ব। ইসরায়েলের এমন পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়ে চিলির উদ্যোগে একটি চিঠি লেখা হয়। জাতিসংঘে প্রচারিত ওই চিঠিতে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের প্রতিবেশী বেশিরভাগ দেশ, সেই সঙ্গে পশ্চিম এশিয়া, দক্ষিণ আমেরিকা, আফ্রিকার দেশগুলো স্বাক্ষর করলেও ভারত করেনি।
দ্য হিন্দুর তথ্যমতে, ইসরায়েলে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সমালোচনা না করায় গত ২ অক্টোবর জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসকে অভিযুক্ত করেন ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ। ইসরায়েলের মাটিতে জাতিসংঘের মহাসচিব পা রাখার যোগ্য নন বলে ঘোষণা দেয় ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। এরপর জাতিসংঘের সদস্য ১০৪টি দেশ ও আফ্রিকান ইউনিয়ন ইসরায়েলের নিন্দা জানিয়ে চিঠি প্রকাশ করে।
চিঠিতে বলা হয়, এই ধরনের কর্মকাণ্ড জাতিসংঘের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের ক্ষমতাকে ক্ষুণ্ন করে, যার মধ্যে রয়েছে দ্বন্দ্ব মধ্যস্থতা ও মানবিক সহায়তা প্রদান। জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে আমরা জাতিসংঘের নেতৃত্ব এবং এর মিশনের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের আহ্বান জানাই। আমরা মহাসচিব এবং তার কাজের প্রতি আমাদের পূর্ণ সমর্থন ও আস্থা পুনর্ব্যক্ত করছি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, চিঠিটি বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ কারণ এটিকে জাতিসংঘ মহাসচিব ও জাতিসংঘের প্রতিরক্ষা হিসেবে দেখা হয়, সংঘাতের কোনো পক্ষ নয়।
ভারত কেন ওই চিঠিতে স্বাক্ষর করেনি, সে বিষয়ে গণমাধ্যমের প্রশ্নের অনুরোধে সাড়া দেয়নি দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।