• ঢাকা
  • রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

গুলিবিদ্ধ আবেকে বাঁচাতে ‘যুদ্ধ‍’ করছেন চিকিৎসকরা


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ৮, ২০২২, ০১:৪৯ পিএম
গুলিবিদ্ধ আবেকে বাঁচাতে ‘যুদ্ধ‍’ করছেন চিকিৎসকরা
ছবি : এপি

নির্বাচনী প্রচারে বক্তৃতা দেওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। তার ডান ঘাড়ে গুলি লেগেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অবস্থা সঙ্কটাপন্ন হওয়ায় তাকে বাঁচাতে চিকিৎসকরা ‘যুদ্ধ’ করছেন বলে জানিয়েছেন দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা।

জাপানের স্বরাষ্ট্র ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অগ্নি ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার বরাতে মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন বলছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের ঘাড়ের ডান পাশে গুলি লেগেছে।

সংস্থাটি বলেছে, গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর তাকে অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর মেডিকেল হেলিকপ্টারে করে হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে তিনি এখন জরুরি চিকিৎসাধীন আছেন।

এদিকে জাপানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম এনএইচকের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, শিনজোকে লক্ষ্য করে দুইবার গুলি চালায় হামলাকারী। তার বুকের বাম পাশ ও ঘাড়ে দুইটি গুলি লেগেছে। দ্রুত হাঁসপাতালে ভর্তি করালেও কার্যত তার হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে গেছে।

এরপর এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে জাপানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা বলেন, “আবের অবস্থা গুরুতর। জরুরী চিকিৎসা চলছে। তার জীবন বাঁচানোর জন্য চিকিৎসকরা যুদ্ধ করছেন। তাকে বাঁচাতে যা যা করা যায় তার সবই করা হচ্ছে। তার জীবন রক্ষার জন্য আমি আমার হৃদয়ের গভীর থেকে প্রার্থনা করছি।”

তিনি আরও বলেন, “দেশ এই কঠিন পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করছে। কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি সামাল দিতে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। এটি ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ।”

এর আগে সংবাদ ব্রিফিংয়ে জাপানের মুখ্য মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিরোকাজু মাতসুনো জানান, স্থানীয় সময় শুক্রবার (৭ জুলাই) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে এ হামলার ঘটনা ঘটে। তবে দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সবশেষ শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানেন না তিনি।এমন বর্বরোচিত আচরণ মেনে নেওয়া হবে না বলে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।

পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থল থেকে সন্দেহভাজন তেতসুয়া ইয়ামাগামি নামে ৪১ বছর বয়সী এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একটি বন্দুক উদ্ধার করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। হামলাকারী পুলিশকে জানিয়েছে সে আবের প্রতি অসন্তুষ্ট ও তাকে হত্যা করতে চেয়েছিল।

শিন ইচিকাওয়া নামে ঘটনাস্থলের এক প্রত্যক্ষদর্শী রয়টার্সকে বলেন, “হঠাৎ এক বিকট শব্দে ধোঁয়া উঠল। প্রথম গুলির পর কেউ বুঝেনি কি ঘটছে, কিন্তু দ্বিতীয় গুলি করার পর নিরাপত্তা বাহিনী হামকালাকারীকে মোকাবেলা করে।”

রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম এনএইচকে বলছে, দুইদিন পরে অনুষ্ঠিত হবে জাপানের উচ্চ কক্ষের নির্বাচন। সেটির প্রচারে অংশ নিয়ে শুক্রবার দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর নারায় একটি রেলস্টেশনের বাইরে সমাবেশে বক্তৃতা দিচ্ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী আবে। এসময় পেছন থেকে তাকে উদ্দেশ্য করে দুবার গুলি চালানো হয়।

জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী প্রধানমন্ত্রী ছিলেন শিনজো আবে। প্রথম দফায় ২০০৬ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত দেশটির ক্ষমতায় ছিলেন তিনি। এরপর ২০১২ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত টানা আট বছর শক্ত হাতে দেশ চালিয়েছেন আবে। দেশকে মুদ্রাস্ফীতির চক্র থেকে বের করতে বড় ভূমিকা ছিল তার। তিনি ক্ষমতাগ্রহণের সময় চীনের সঙ্গে জাপানের বিরোধপূর্ণ সম্পর্ক ছিল দীর্ঘদিনের। তবে আবের সুদক্ষ কৌশলে এ পরিস্থিতির উন্নতি ঘটে।

বন্দুক নিয়ন্ত্রণে জাপানে রয়েছে কড়াকড়ি নিয়ম। এমন দেশে এরকম রাজনৈতিক সহিংসতা বিরল। সবশেষ ২০০৭ সালে নাগাসাকির মেয়রকে ইয়াকুজা গ্যাংস্টার গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটে। এর আগে ১৯৬০ সালে বক্তৃতার সময় জাপানের সোশ্যালিস্ট পার্টির প্রধানকে ডানপন্থী এক যুবক সামুরাই ছোট তলোয়ার দিয়ে হত্যা করেছিল।

Link copied!