বিরল রোগ মাঙ্কিপক্স এখন পর্যন্ত ১২ দেশে ছড়িয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এসব দেশে এই রোগে আক্রান্ত পাওয়া গেছে ৮০ জন। সন্দেহভাজন আক্রান্ত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে আরও ৫০ জন। আগে থেকে এই রোগের বিস্তার থাকলেও নেই কোনো নির্দিষ্ট প্রতিষেধক টিকা। এটি করোনার মতো দ্রুত না ছড়ালেও একে অন্যের সংস্পর্শে আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা থাকে।
বিবিসি বলছে, বিরল রোগটি মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকার দুর্গম এলাকায় পরিচিত। বিশ্বের অন্যান্য স্থানে মাঙ্কিপক্সের উপস্থিতি ছিল বিরল। যা এবার দেশে দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। এখন পর্যন্ত যারা আক্রান্ত হয়েছেন, তারা আফ্রিকা ভ্রমণ করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। কেউ কেউ ভ্রমণকারীর সংস্পর্শে এসেও আক্রান্ত হচ্ছেন।
শুক্রবার পাঠানো এক বিবৃতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানায়, মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাবের পরিমাণ ও কারণ আরও ভালোভাবে বুঝতে কাজ করছে ডব্লিউএইচও। ভ্রমণকারীদের মাধ্যমে বেশ কয়েকটি দেশে ছড়িয়েছে ভাইরাসটি। এখন পর্যন্ত মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে ১২টি দেশে। আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ ও সন্দেহভাজন ৫০ জন।
ডব্লিউএইচও বলছে, করোনার মতো দ্রুত মাঙ্কিপক্স ছড়ায় না, ভিন্নভাবে ছড়ায়। একজনের সঙ্গে অন্যের ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে ভাইরাসটি ছড়ায়। আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিরা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। বিশেষ করে পরিবারের সদস্য, স্বাস্থ্যকর্মী। যৌন মিলনের মাধ্যমেও একজনের দেহ থেকে অন্যের দেহে ভাইরাসটি ছড়ায়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পরামর্শ দিয়েছে, দেহে লক্ষণ বা উপসর্গ দেখা দিলে জাতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। তাদের পরআমর্শ ছাড়া চিকিৎসা নেওয়া যাবে না।
ইউরোপের ৯টি দেশে মাঙ্কিপক্স আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে। এর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাজ্য, স্পেন, পর্তুগাল, জার্মানি, বেলজিয়াম, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, ইতালি ও সুইডেন। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়াতে এই বিরল রোগে আক্রান্ত পাওয়া গেছে।
যুক্তরাজ্যের জাতীয় স্বাস্থ্যসেবার মতে, মাঙ্কিপক্স বিরল ভাইরাল সংক্রমণ। এই ভাইরাস খুব বেশি মারাত্মক না। আক্রান্ত বেশির ভাগ মানুষ কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সুস্থ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। ভাইরাসটি সহজে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে না।
মাঙ্কিপক্সের জন্য কোনো নির্দিষ্ট ভ্যাকসিন নেই। তবে গুটিবসন্তের জ্যাব এই ভাইরাস থেকে ৮৫ ভাগ সুরক্ষা প্রদান করতে সক্ষম। কারণ দুটি ভাইরাস বেশ একই রকম। যুক্তরাজ্য ইতোমধ্যে সেই ভ্যাকসিনের স্টক কিনেছে। স্প্যানিশ স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় হাজার হাজার গুটিবসন্ত প্রতিরোধী জ্যাব কিনেছে বলে জানা গেছে।
