হরিদ্বার রাজ্যে হিন্দু জাতীয়তাবাদী সাধুদের এক ধর্মীয় সমাবেশকে কেন্দ্র করে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে ভারতে। সমাবেশে বিজেপির অনুসারী বক্তারা প্রকাশ্যে মুসলিম নিধন ও গণহত্যার ডাক দেওয়ায় বিপাকে পড়েছে শাসক দল।
১৭ থেকে ২০ ডিসেম্বর মুসলিমবিদ্বেষী হিসেবে পরিচিত গাজিয়াবাদের বিতর্কিত হিন্দু সাধু ইয়তি নরসিংহানন্দের উদ্যোগে হরিদ্বারে এই ধর্মসভা আয়োজন হয়। এতে সাধুরা প্রকাশ্যে মুসলিমদের ‘এথনিক ক্লিনসিং’ বা গণহত্যার ডাক দেন। উত্তরাখণ্ডের হিন্দু জাতীয়তাবাদী সংগঠন ‘হিন্দু রক্ষা সেনা’র নেতা প্রবোধানন্দ গিরি এ সময় বলেন, “হিন্দুদের হয় মরতে প্রস্তুত হতে হব - নইলে মরতে হবে।”
এছাড়া সাধ্বী অন্নপূর্ণা নামে আরেক নারী সন্ন্যাসি মুসলিমদের উদ্দেশে বলেন, “ওদের নিকেশ করতে হলে মারতে হবে - আমাদের একশোজন হিন্দু সেনা চাই, যারা ওদের বিশ লক্ষকে খতম করতে পারবে।”
পুলিশ, সেনাবাহিনী, রাজনৈতিক নেতা ও প্রত্যেক হিন্দুকে মুসলিমদের বিরুদ্ধে নির্মূল অভিযানে নামারও ডাক দেন অন্নপূর্ণা। হরিদ্বারের সেই সভায় সাধুদের সঙ্গে বিজেপি নেতা অশ্বিনী উপাধ্যায়কেও দেখা গেছে। এসব সাধু সন্ন্যাসীদের বিভিন্ন সময় দেখা যায় বিজেপি নেতাদের সঙ্গে।
সামাজিক মাধ্যমে উত্তরাখন্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর ধামি ও উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গেও অনেকের ছবি রয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে এই ধর্মসভার ভিডিও আর ভারতীয় নেতাদের সঙ্গে সাধুদের ছবি ভাইরাল হয়।
এ কারণে কূটনৈতিকভাবে ভারত সরকারকে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। এ ঘটনার পর ইসলামাবাদে ভারতের দূতকেও ডেকে উদ্বেগ জানায় পাকিস্তান সরকার। হরিদ্বারের ঘটনায় সুপ্রিম কোর্টকে ব্যবস্থা নিতেও আর্জি জানিয়েছেন ভারতের শীর্ষ আইনজীবীরা।
বিতর্কিত সমাবেশ নিয়ে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি ভারত সরকার। আর শাসক দল বিজেপির নেতারা বলেছেন, ওই ধর্মীয় সমাবেশের সঙ্গে তাদের বা সরকারের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।