চরম অর্থ সংকটে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতার পর দেশটিতে এমন ভয়াবহ সংকট দেখা যায়নি। দেখা দিয়েছে বৈদেশিক মুদ্রার অভাব। এতে প্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে দেশটিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য দিন দিন লাফিয়ে বাড়ছে। ১ কেজি চালের মূল্য ৫০০ রুপি ছুঁই ছুঁই করছে। এমন পরিস্থিতিতে অনেকেই অবৈধ পথে দেশ ছাড়ছেন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বলছে, গত মঙ্গলবার ১৬ জন শ্রীলঙ্কান সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছেন। এদের মধ্যে তিন শিশু ও পাঁচজন নারী ছিলেন। তারা সবাই তামিলনাডুতে আশ্রয় নিয়েছেন।
তামিলনাডু পুলিশ বলছে, শ্রীলঙ্কা অর্থ সংকটে পড়ায় বেকারত্ব বাড়ছে। ফলে অনেকেই দেশ ছাড়ছেন।
গোয়েন্দারা বলছেন, আগামী সপ্তাহের মধ্যে প্রায় ২ হাজার শরণার্থী তামিলনাডুতে প্রবেশ করার সম্ভাবনা রয়ছে।
শরণার্থীরা পুলিশকে জানান, তারা বাধ্য হয়ে দেশ ছেড়েছেন। কয়েক সপ্তাহ ধরে খাদ্যাভাবে ছিলেন তার। ৫০ হাজার রুপির বিনিময়ে তারা সীমান্ত পার হয়েছেন। আরও অনেক শ্রীলঙ্কান পরিবার ভারতে প্রবেশে চেষ্টা করছেন।
এই সংকট আরও বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেছে শ্রীলঙ্কান অধিকারকর্মী ভি এস শিভাকরণ।
তিনি বলেন, “অনেকে শ্রীলঙ্কা ছাড়ার পরিকল্পনা করছেন। এমন অনেকে আছেন যাদের আমি চিনি। আগামীকাল কি ঘটতে যাচ্ছে তা আমাদের অজানা। আমরা উদ্বিগ্ন। নিত্যপণ্যের দাম প্রতিদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।”
এই অধিকারকর্মী জানান, আগামী সপ্তাহের মধ্যেই শ্রীলঙ্কায় এক কেজি চালের মূল্য দাঁড়াবে ৫০০ রুপিতে, যা বর্তমানে ২৯০ রুপি। এছাড়া এক কেজি চিনি কিনতে হচ্ছে ২৯০ রুপি দিয়ে। ৪০০ গ্রাম দুধের গুঁড়ার দাম পড়ছে ৭৯০ রুপি। শেষ তিন দিনে দুধের দাম বেড়েছে ২৫০ রুপি।
এদিকে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, মুল্য বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে দেশটির খাবার হোটেল ও রেস্টুরেন্টে। রেস্টুরেন্টে এক কাপ চায়ের দাম রাখা হচ্ছে ১০০ রুপি।
এর আগে কাগজের অভাবে শ্রীলঙ্কায় স্কুল শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা বাতিল ঘোষণা করা হয়। বৈদেশিক মুদ্রার অভাবে প্রয়োজনীয় কাগজ ও কালি আমদানি করতে পারেনি দেশটি। এতে প্রায় ৪৫ লাখ স্কুল শিক্ষার্থী পরীক্ষা দেওয়া থেকে বঞ্চিত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সহায়তা চেয়েছে দেশটি।