• ঢাকা
  • বুধবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১, ১৯ রবিউস সানি ১৪৪৬

শ্রীলঙ্কার দুর্দশা নিয়ে হতাশ প্রধানমন্ত্রী?


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: এপ্রিল ১২, ২০২২, ০৪:৩৪ পিএম
শ্রীলঙ্কার দুর্দশা নিয়ে হতাশ প্রধানমন্ত্রী?
ছবি : সিলন টুডে

প্রথমবারের মতো নিজ দেশে চলমান দুর্দশার কথা স্বীকার করলেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে। মহামারি থেকে নিজ দেশকে রক্ষা করতে পারলেও রাজনৈতিক ও অর্থসংকটের কবলে পড়ে শ্রীলঙ্কা অতল গহ্বরে নিমজ্জিত হচ্ছে বলে জানানলেন প্রধানমন্ত্রী।

সোমবার (১১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় এক বিশেষ বিবৃতিতে এসব জানান প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে। সিলন টুডে এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, “দেশে চলমান সংকট নিরসনে আমরা বিরোধীদের আহ্বান জানিয়েছি। বর্তমান অর্থসংকট সমাধান ও দেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে সংসদে প্রতিনিধিত্বকারীদের আহ্বান জানিয়েছিলাম আমরা। কিন্তু কেউই আমাদের আহ্বানে সাড়া দেয়নি।”

শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে বলেন, “কেউ দায়িত্ব না নিলেও ক্ষমতায় থাকা দল হিসেবে আমরা দায়িত্ব গ্রহণ করি। আমরা এই সমস্যার সমাধান প্রদান করব।”

মার্কিন ডলারের ঘাটতির কারণে জ্বালানি আমদানি নিয়ে সংকটে আছে শ্রীলঙ্কা। এতে জনগণকে নানা সমস্যায় পড়তে হয়েছে বলেও স্বীকার করেন মাহিন্দা রাজাপাকসে।

তিনি বলছিলেন, “জ্বালানির অপেক্ষায় লাইনে দাঁড়িয়ে কষ্টে দিন কাটাতে হয়েছে এমন মানুষদের ক্লান্তি আমরা বুঝি। গ্যাস কিনতে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা নারীদের কষ্ট আমরা বুঝতে পারি।”

পণ্যের আকাশছোঁয়া দাম ও জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয়ের কারণে জনগণের সমস্যা সম্পর্কে সরকারেরও ভালো ধারণা রয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা।

শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা মহাসড়ক ও নতুন রাস্তা তৈরি করেছি। সেই রাস্তায় মানুষকে সারিবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করার জন্য নয়।”

মাহিন্দা রাজাপাকসে বলেন, “জনগণের কাছ থেকে গণতান্ত্রিক ম্যান্ডেট পাওয়া সরকারের দায়িত্ব হলো এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া যা গণতান্ত্রিক কাঠামোকে বিপন্ন করে না। আমরা সবসময় সেই উদ্দেশ্য মাথায় রেখে কাজ করব।”

তিনি আরও বলেন, “এই সরকার খুব কঠিন পরিস্থিতিতে বিদেশ থেকে সাহায্য নিলেও দেশের স্বাধীনতা রক্ষার চেষ্টা করেছে। তাই, আমরা জনমতের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে শ্রীলঙ্কায় বড় বিনিয়োগ আনার সুযোগ প্রত্যাহার করে নিয়েছি।”

শ্রীলঙ্কা বিদেশি ঋণমুক্ত হচ্ছে জানিয়ে মাহিন্দা রাজাপাকসে বলেন, “এই সরকার জনগণের সঙ্গে কাজ করার জন্য ও শ্রীলঙ্কাকে একটি ঋণমুক্ত দেশে পরিণত করার জন্য বিদেশ থেকে ঋণ সীমিত করেছে।”

জনরোষের প্রভাব পড়েছে দেশের সংসদ ও মন্ত্রণালয়ে। দেশটির মন্ত্রিসভার ২৬ জন মন্ত্রী একযোগে পদত্যাগপত্র জমা দেন। এরপর দেশের ৪০ জন সাংসদ ক্ষমতাসীন জোট ছেড়ে যান। তারা সংসদে স্বতন্ত্র প্রতিনিধিত্ব করার জন্য জোট ছেড়েছেন।

এদিকে আগামী ছয় মাসের জন্য ৩০০ কোটি ডলার বৈদেশিক সহায়তা চেয়েছে চরম অর্থসংকটে থাকা শ্রীলঙ্কা। জ্বালানি, ওষুধসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের সরবরাহ পুনরুদ্ধার করতে এ সহায়তা প্রয়োজন বলে জানান শ্রীলঙ্কার অর্থমন্ত্রী আলী সাবরি। যদিও সহায়তার পাওয়ার বিষয়ে কিছুই জানা যায়নি।

২০১৯ সাল থেকে রাজাপাকসে ও তার পরিবারের সদস্যরা দেশটির প্রশাসনে রয়েছে। কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলা করছে দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিসহ নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে চলছে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ।

Link copied!