বিশ্বের প্রায় ৯০টির বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন। দ্রুত সংক্রমণশীল এই নতুন রূপকে ঠকাতে হিমশিম খাচ্ছে বিভিন্ন দেশের সরকার।
যদিও অনেকে মনে করছেন, সংক্রমণ বাড়ায় ক্ষতির পরিবর্তে সুবিধাই হচ্ছে মানুষের। ওমিক্রনের প্রভাবে দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ছে।
তবে চিকিৎসকরা এই ধারণার সঙ্গে একমত নন। তাদের মতে, ওমিক্রনকে হালকা করে দেখলে ভুল হবে। হয়তো পরবর্তী পর্যায়ে ওমিক্রনের প্রভাবে বাড়তে পারে অন্যান্য শারীরিক সমস্যা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থারও একই মত (ডব্লিউএইচও)।
ডব্লিউএইচও-এর মহামারি গবেষকদলের প্রধান মারিয়া ভ্যান কেরখোভে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ওমিক্রনে সংক্রমণ লাগামছাড়া হওয়া মোটেই ভালো লক্ষণ নয়। বরং এটাকে যত সম্ভব প্রতিরোধ করা উচিত। তার মতে, সংক্রমণ বাড়ার পিছনে রয়েছে তিনটি কারণ।
প্রথম কারণ হল করোনাভাইরাসের মিউটেশন বা রুপান্তর। বার বার রূপ পরিবর্তনের কারণে নতুন করোনাভাইরাস ওমিক্রন সহজেই মানুষের শরীরে প্রবেশ করতে পারছে। আর সহজেই কোষ থেকে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ছে এটি।
চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় ইমিউন এস্কেপ বা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে ফাঁকি দেওয়ার ক্ষমতাও অর্জন করেছে নতুন ভাইরাসটি। ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে সহজেই পাশ কাটিয়ে দেহে প্রবেশ করতে পারে ওমিক্রন। কেউ আগে একবার করোনা সংক্রমিত হলেও তার শরীরের অ্যান্টিবডিকে ফাঁকি দিতে সক্ষম নতুন রূপটি। এমনকি টিকা নেওয়া থাকলেও, সেই অ্যান্টিবডিকে ফাঁকি দিতে পারছে সে।
তৃতীয় ও সর্বশেষ কারণ আপার রেস্পিরেটরি ট্র্যাক্টের অর্থাৎ মুখ থেকে শুরু করে দেহের শ্বসনযন্ত্রের উপরের অংশে সংক্রমণ। করোনার আগের রূপগুলি ফুসফুসে বেশি মাত্রায় ছড়াতো। তাই এক জনের থেকে অন্য জনে সংক্রমণ হতে সময় লাগত। তবে ওমিক্রন উপরের স্তরগুলোতে থাকায় আশেপাশের লোকজনকে সংক্রমিত করতে তার সময় লাগছে তার চেয়ে অনেক কম।
এছাড়াও উত্তর গোলার্ধে শীতকাল থাকায় অনেক মানুষই বাড়ির ভিতরে কাছাকাছির অবস্থান করছেন বেশি সময় ধরে। তাই সংক্রমণও বাড়ছে হু হু করে।