• ঢাকা
  • বুধবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১, ১৯ রবিউস সানি ১৪৪৬

আদালতের রায়ে পাকিস্তানে রাজনৈতিক ‘সংকট বাড়বে’


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: এপ্রিল ৮, ২০২২, ০৩:৪৯ পিএম
আদালতের রায়ে পাকিস্তানে রাজনৈতিক ‘সংকট বাড়বে’
ছবি : আল-জাজিরা

জাতীয় পরিষদে অনাস্থা প্রস্তাব খারিজের আদেশ ও সংসদ ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিলের নির্দেশ দিয়েছেন পাকিস্তানের সর্বোচ্চ আদালত। সেই সঙ্গে শনিবার (৯ এপ্রিল) সংসদে ইমরান খানের বিরুদ্ধে পুনরায় অনাস্থা ভোট আয়োজনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।

তবে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ আদালতের এমন রায়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ইমরানের ক্ষমতাসীন দল তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) নেতারা।

দ্য ট্রিবিউন এক্সপ্রেস বলছে, পিটিআই সাংসদ ও পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী প্রতিক্রিয়া জানিয়ে টুইটারে বার্তা দিয়েছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, “আদালতের এ রায় দুর্ভাগ্যজনক। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে দেশে রাজনৈতিক সংকট বাড়বে। দুর্ভাগ্যবশত, জনগণের গুরুত্ব উপেক্ষা করা হয়েছে। দেখা যাক সামনে কী হয়।”

পাকিস্তানে দ্রুত সময়ের মাধ্যমে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে ফাওয়াদ চৌধুরী আরও বলেন, “অবিলম্বে নতুন নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আনা সম্ভব।”

পাকিস্তানের তথ্য প্রতিমন্ত্রী ফারুখ হাবিব বলেন, “প্রধানমন্ত্রী ইমরান জয়ী হয়েছেন, বিরোধীরা পরাজিত হয়েছে। ইমরান খানের ভয়ে সব চোর হাত মিলিয়েছে।”

পিটিআই সিনেটর ফয়সাল জাভেদ এক বিবৃতিতে বলেছেন, “জাতির বিজয় হবে। প্রধানমন্ত্রী ইমরান শিগগিরই তার পরবর্তী কৌশল ঘোষণা করবেন।”

এর আগে বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) প্রেসিডেন্ট ড. আরিফ আলভির পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে বেআইনি বলে মন্তব্য করেন পাকিস্তানের সর্বোচ্চ আদালত। এছাড়া ইমরান খানকে প্রধানমন্ত্রী পদে ও মন্ত্রিসভাকে পুনর্বহালের রায় দেন। সেই সঙ্গে শনিবার (৯ এপ্রিল) পার্লামেন্টে ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট আয়োজনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।

রায়ে পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি উমর আতা বন্দিয়াল বলেন, “জাতীয় স্বার্থ ও বাস্তব সম্ভাবনা দেখেই আদালত এগিয়ে এসেছেন। পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে প্রেসিডেন্টকে পরামর্শ দেওয়ার অধিকার নেই প্রধানমন্ত্রীর। এ সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়েছে।”

রায়ের প্রতিক্রিয়া জানাতে শুক্রবার (৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন ইমরান খান। ভাষণের কথা জানিয়ে টুইটারে এক বার্তায় তিনি বলেন, “আমি মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকেছি। সেই সঙ্গে সংসদীয় দলেরও বৈঠক ডেকেছি। শুক্রবার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেব। আমার বার্তা হলো, আমি সব সময়ই পাকিস্তানের হয়ে শেষ বল পর্যন্ত লড়াই করে যাব।”

পাকিস্তানের সর্বোচ্চ আদালতের দেওয়া রায়কে ঐতিহাসিক আখ্যা দিয়েছেন বিরোধী দলগুলো। আর সরকার দলের প্রতিনিধিরা আদালতের এমন আদেশে অসন্তোষ জানিয়েছে। এই রায়কে দুর্ভাগ্যজনক অ্যাখা দিয়ে দেশকে আরও রাজনৈতিক অস্থিরতার দিকে ঠেলে দেবে বলে মন্তব্য করেছেন ইমরান খানের সমর্থকরা। এর আগে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনে দেশের বিরোধী দলগুলো। রোববার এ প্রস্তাব খারিজ করে দেন পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরি।

সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৫ এর উল্লেখ করে ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরি জানান, রাষ্ট্রের প্রতি অনুগত থাকা প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক দায়িত্ব। সংবিধান ও আইনের প্রতি অনুগত থাকা নাগরিকদের জন্য বাধ্যতামূলক এবং পাকিস্তানে অবস্থান করা প্রত্যেকের জন্যই তা প্রযোজ্য।

ডেপুটি স্পিকারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আদালতে যান বিরোধীরা। এর জেরে সৃষ্ট সংকটের প্রেক্ষাপটে স্বতঃপ্রণোদিত (সুয়োমোটো) নোটিশ দেন সর্বোচ্চ আদালত।

ইমরান খানের বিরুদ্ধে দেশ শাসনে অনিয়মের অভিযোগ এনে গত ৮ মার্চ অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেয় বিরোধী দলগুলো। এ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা ও ভোটাভুটির জন্য অধিবেশন ডাকতে স্পিকার আসাদ কায়সারের প্রতি লিখিত আবেদন জানান তারা।

Link copied!