রাশিয়ার সেনা অভিযানে ক্রমেই কোণঠাসা হয়ে পড়ছে ইউক্রেন। পশ্চিমাদের নানামুখী নিষেধাজ্ঞায়ও দমানো যাচ্ছে না রুশ আগ্রাসনকে। এরই মধ্যে সেনা অভিযান বন্ধে তিন শর্ত দিয়েছেন ভ্লাদিমির পুতিন। এই তিন শর্ত ইউক্রেন মেনে নিলেই মুহূর্তেই সেনা অভিযান বন্ধ করে দেবেন তিনি।
রাশিয়ার তিন শর্তের মধ্যে রয়েছে ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে স্বীকার করা, দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে মেনে নেওয়া এবং সংবিধান সংশোধন করে ন্যাটোর সদস্য না হওয়ার ব্যবস্থা করা। মূলত ইউক্রেনের ন্যাটোর সদস্য হওয়ার বাসনাই ক্ষিপ্ত করেছে রাশিয়াকে। পুতিন কোনোভাবেই তার সীমান্তের কাছে পশ্চিমা এই সামরিক জোটকে ঘেঁষতে দেবেন না।
এদিকে রাশিয়ার বিপক্ষে কার্যত একাই লড়ছে ইউক্রেন। যে ন্যাটোর সদস্য হওয়ার জন্য রাশিয়ার সামরিক অভিযানের মধ্যে পড়তে হয়েছে তাদের, সেই ন্যাটোকে এখন পর্যন্ত যুদ্ধক্ষেত্রে পাশে পায়নি কিয়েভ। আমেরিকা ও ইউরোপের তৎপরতা শুধু বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞার মধ্যে সীমাবদ্ধ। রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে জড়াতে আগ্রহী নয় তারা।
এমন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ন্যাটোর হওয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। এক টেলিভিশন ভাষণে ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, তিনি বুঝে গেছেন, ন্যাটো রাশিয়াকে চটাবে না। তাই ন্যাটোয় যোগ দেওয়ার ব্যাপারে তিনিও কোনো জোরাজুরি করবেন না।
পাশাপাশি রাশিয়াপন্থী দোনেৎস্ক ও লুহানস্কর বর্তমান অবস্থা নিয়েও খোলা মনে সমঝোতা করতে প্রস্তুত বলে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন।
জেলেনস্কি বলেন, “আমরা বুঝে গেছি, ন্যাটো ইউক্রেনকে মেনে নিতে প্রস্তুত নয়। বিতর্কের ভয় পায় এই জোট। রাশিয়ার সঙ্গে সংঘাতে যেতেও তারা চায় না।”
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট অভিযোগ করে আরও বলেন, “১৩ দিন ধরে শুধু প্রতিশ্রুতির কথা শুনেই আসছি। আকাশপথে নাকি আমাদের সাহায্য করা হবে। আমাদের জন্য বিমান পাঠানো হবে। এ বিষয়ে এখনো যারা সিদ্ধান্ত নিতে পারল না, রাশিয়ার আক্রমণ থেকে ইউক্রেনের আকাশকে সুরক্ষিত রাখতে পারল না, দায়িত্ব কিন্তু তাদের ওপরেই বর্তাবে।”