বিশ্ব পানি দিবসে পানির সংকট নিয়ে আশঙ্কার কথা জানাল জাতিসংঘ। সংস্থাটির এক গবেষণায় দাবি করা হয়, ২০৫০ সাল নাগাদ বিশ্বের ৫০০ কোটি মানুষ তীব্র পানির সংকটে ভুগবেন।
মূলত জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই বিশ্বজুড়ে সুপেয় পানির অভাব দেখা দিচ্ছে। অপরিকল্পিতভাবে জনসংখ্যা বৃদ্ধি, খরা ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাবে সৃষ্টি হচ্ছে এই অবস্থার। আর এই সংকট আগামী কয়েক দশকে আরও তীব্র আকার ধারণ করতে পারে বলেই আশঙ্কা জাতিসংঘের।
জাতিসংঘের বিশেষ সংস্থা ইউনেস্কোর প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে। বিশ্ব পানি দিবস উপলক্ষে এই বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।
ইউনেস্কোর প্রতিবেদন বলছে, ভূগর্ভস্থ পানি থেকে বর্তমানে বিশ্বের ৯৯ শতাংশ সুপেয় পানি আসে। আর আগামী তিন দশকে বিশ্বে পানির ব্যবহার আরও ১ শতাংশ বাড়বে।
কিন্তু বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ভূগর্ভস্থ পানির সরবরাহ ব্যবস্থা। এ কারণে ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের ৫০০ কোটি মানুষকে পানি সংকটে পড়তে যাচ্ছে। এর আগেও ২০১৮ সালে বিশ্বের প্রায় ৩৫০ কোটি মানুষ অন্তত এক মাস পানিসংকটে ভুগেছে।
বিশ্বের পানির চাহিদা মেটাতে ভূগর্ভস্থ পানি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। পৃথিবীর মোট সুপেয় পানির ১ শতাংশ আসে বরফের তল থেকে।
এই পানি কোনো শোধন ছাড়াই নিরাপদে ব্যবহার করা যায়। এছাড়াও পানি আসে খালবিল থেকে। কিন্তু উপরিভাগের এই পানির ওপরেও জলবায়ু পরিবর্তনের ব্যাপক প্রভাব পড়ছে। সেই তুলনায় ভূগর্ভস্থ পানির যোগান পর্যাপ্ত আছে।
ইউনেস্কোর প্রধান সম্পাদক রিচার্ড কনর বলেন, “পানি সংকট সমাধানের বিষয়ে যদি আমরা অজ্ঞাত থাকি, তাহলে কীভাবে হবে? ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহারের টেকসই ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে। তাহলে আমরা এ থেকে অনেক সুবিধা পাব।”
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, কৃষিকাজে ব্যবহৃত পানির এক-চতুর্থাংশ আসে ভূগর্ভস্থ পানি থেকে। মানুষের দৈনন্দিন কাজে ব্যবহৃত পানির অর্ধেকও সেখান থেকেই আসে।
বিশ্বের বেশিরভাগ গ্রামাঞ্চলে মানুষের বিশুদ্ধ খাওয়ার পানির সবচেয়ে সহজ মাধ্যম এটি। তবে অতিরিক্ত ভূগর্ভস্থ পানি ব্যাপক হারে উত্তোলন তোলা হলে পরিণতি খারাপ হতে পারে। এর ফলে ফসলি জমিতে পানির সরবরাহও কমে যেতে পারে।