২০১৯ সালে নিউজিল্যান্ডের দুই মসজিদে উগ্র শ্বেতাঙ্গবাদীর হামলা প্রতিরোধে ভূমিকা রাখার স্বীকৃতি পেলেন দুই মুসলিম নাগরিক। সাহসিকতার পুরষ্কারস্বরূপ ‘নিউজিল্যান্ড ক্রস’ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন ড. নাইম রশীদ ও আব্দুল আজিজ।
এছাড়াও ক্রাইস্টচার্চ ও লিনউডের দুই মসজিদে হামলা প্রতিহত করার চেষ্টাকারী আরও ৮ জনকে বিভিন্ন বিভাগে পুরস্কৃত করেছে নিউজিল্যান্ড সরকার। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের খবরে এসব তথ্য জানা গেছে।
হামলার দিন ড. রশীদ ও তার ছেলে ক্রাইস্টচার্চের আল নূর মসজিদে জুম্মার নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন। আচমকা এক বন্দুকধারী ঢুকে নির্বিচারে গুলি করা শুরু করে।
এসময় ড. রশীদ পেছন থেকে বন্দুকধারীকে প্রতিরোধ করতে তার দিকে দৌড়ে ছুটে যান। হামলাকারী টের পেয়ে ঘুরে গুলি ছুড়ে তার দিকে। কাঁধে গুলিবিদ্ধ হয়েও ড. রশীদ হামলাকারীকে জাপটে ধরে মাটিতে ফেলে দিতে সক্ষম হন।
হামলাকারী উঠে আবারও গুলি করলে ড. রশীদ ঘটনাস্থলে মারা যান। তবে রশীদের সাহসিকতার কারণে অন্তত সাতজন মুসল্লি পালিয়ে গিয়ে প্রাণে বেঁচে যান।
নিউজিল্যান্ড ক্রস পাওয়া আব্দুল আজিজ একই দিন ছেলেকে নিয়ে নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন লিনউড মসজিদে। বন্দুকধারী ক্রাইস্টচার্চের পর সেখানে গিয়ে হামলা চালায়।
নির্বিচারে গুলি করতে করতে গুলি ফুরিয়ে গেলে সে আরেকটি বন্দুক নিতে গাড়িতে ফিরে আসে। এ সময় আব্দুল আজিজ একটি ক্রেডিট কার্ড মেশিন হাতে নিয়েই বন্দুকধারীকে আক্রমণ করেন। বন্দুকধারী গুলি করলে তিনি একটি গাড়ির আড়ালে সরে যান।
এরপর বন্দুকধারীর ফেলে দেয়া বন্দুকটি তুলে গুলি করতে গিয়ে দেখেন তাতে আর গুলি নেই। এরপরও তিনি গাড়ির আড়াল থেকে চিৎকার করে বন্দুকধারীকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন এবং বন্দুকটি দিয়ে তার গাড়ির পেছনের জানালা ভেঙে ফেলেন। হামলাকারী তার প্রতিরোধের মুখে ঘটনাস্থল থেকে গাড়ি চালিয়ে পালিয়ে যায়।
২০১৯ সালে নিউজিল্যান্ডের মসজিদে দুইটিতে বন্দুকধারীর হামলায় ৫১ জন মুসলিমের মৃত্যু হয়। গত বছর নিউজিল্যান্ডের আদালত হামলাকারীকে দেশটির আইনে সর্বোচ্চ শাস্তি আমরণ কারাদণ্ড দেয়।