• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইরফানে সমর্পিত গদ্যমালা


হাসান শাওন
প্রকাশিত: এপ্রিল ২৯, ২০২৩, ০৫:১৭ পিএম
ইরফানে সমর্পিত গদ্যমালা

বড়লোকদের পরিবারতান্ত্রিক বলিউডে একজন ইরফান খান ছিলেন ব্যতিক্রম। তিনি হতে পারতেন ক্রিকেটার। তার ছোটবেলা ও তরুণ বয়সে তেমন নজির ছিল। ভারতীয় ক্রিকেটে প্রতিভাবানদের খুঁজে নেওয়ার আসর সিকে নাইডু ট্রফিতে খেলার সুযোগ আসে। কিন্তু যাতায়াত ভাড়ার অভাবে টিমের সঙ্গে যোগ দেওয়া হয়নি তার।

অভিনয়ে ডাক আসার আগে মুম্বাইয়ের বাসায় বাসায় গিয়ে এয়ারকন্ডিশনার মেরামতের কাজ করেছেন তিনি। কিন্তু দারিদ্র্য সহ্য করে ইরফান ভালোবেসেছেন অভিনয়কে। আর ভালোবাসায় খুলতে বাধ্য উচ্চতম সাফল্যের দুয়ার।    

মাত্র ৫৩ বছর বয়সে ২০২০ সালের আজকের এই দিনে চলে যান অসামান্য শক্তিমান অভিনেতা ইরফান খান। এককভাবে যিনি শুধু অভিনয় দিয়ে বিশ্বমানচিত্রে ভারতকে নিয়ে গেছেন অন্য উচ্চতায়।

হলিউড-বলিউড মিলে যে ফ্র্যাঞ্চাইজি সিনেমা-সংস্কৃতি এখন খুব দৃশ্যমান, এর ভিত্তির অন্যতম নির্মাতা ইরফান খান। বহু সিনেমার চিত্রনাট্য লেখা হয়েছে তার অভিনয় শক্তিমত্তা ভেবে। আবার গল্প দুর্বল কিন্তু তার অভিনয়ে উতরে গেছে, এমন সিনেমার সংখ্যাও কম নয়। ভারতের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ‘পদ্মশ্রী’ অর্জন করেছে ইরফান—এমন সব বিস্ময়কর কীর্তিগুণে।

চোখের ভাষা, হাসি, সংলাপ বলা থেকে শুরু করে এ অভিনেতার প্রতিটি ইন্দ্রিয় যেন নিবেদিত ছিল অভিনয়ে। দুনিয়া কাঁপানো চলচ্চিত্র তারকা হয়েও ইরফান খানকে নিয়ে কোনো ধরনের স্ক্যান্ডাল তৈরির সুযোগ পায়নি গুঞ্জননির্ভর বিনোদনপাড়া।

নয়াদিল্লির ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামায় পড়ার সময় ইরফানের সঙ্গে পরিচয় বাঙালি মেয়ে লেখিকা সুতপা সিকদারের। সে সম্পর্ক বিয়েতে গড়ায় ১৯৯৫ সালে। তাদের সংসার পূর্ণতা পায় দুই ছেলে বাবিল আর আয়ানের আবির্ভাবে। আমৃত্যু ইরফান পরিচিত ছিলেন ‘ফ্যামিলিম্যান’ হয়েই।

১৯৬৭ সালের ৭ জানুয়ারি সাহাবজাদে ইরফান আলী খান নামে যে শিশুটি মায়ের গর্ভ থেকে ধরায় আসা, সেই মা সাইদা বেগমের মৃত্যু হয় ইরফান চলে যাওয়ার ঠিক ৪ দিন পরে। বিধি নির্ধারিত এমন অনেক কিছুই ভাবনাতীত। একজন অভিনেতা হয়ে গ্রহকে আলোড়িত করা ইরফানের জীবন এর বাইরে নয়।

Link copied!