আমাদের আশেপাশে ছড়িয়ে থাকা খুব সাধারণ কিছু পদার্থ থেকেই অ্যালার্জির সমস্যা তৈরি হয়। সাধারণভাবে এই পদার্থগুলো মোটেই ক্ষতিকর নয়। তবে কারও কারও ক্ষেত্রে এগুলোই প্রচণ্ড সমস্যার সৃষ্টি করে। যেমন, ধুলোবালি, ফুলের রেণু, পশুর লোম, বিশেষ কোনও খাবার যেমন ডিম, চিংড়ি, বেগুন ইত্যাদি। বিশেষজ্ঞদের কথায়, কিছু কিছু ওষুধ থেকেও অনেকের অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দেয়।
শীতের সময়ে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ কমে যায়। শুষ্কতার কারণে চারদিকে ধুলোবালির পরিমাণ বেড়ে যায়। এসময় সামান্য বাতাসেও অনেকের অ্যালার্জির সমস্যা শুরু হয়। খুসখুসে কাশি, সর্দি, নাক চুলকানো, চোখের ভেতর চুলকানোর মতো অনুভূতি হতে থাকে। এই সমস্যা থাকে অনেকেরই। ঋতু পরিবর্তনের সময় এই অ্যালার্জি হতে পারে, তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে হয় ধুলোবালির কারণে। এদিকে অ্যালার্জির ওষুধের কারণে সারাদিন চলতে থাকে ঘুম ঘুম ভাব। তাই এভাবে ওষুধ না খেয়ে ঘরোয়া উপায় বেছে নিলে সেটি বেশি কার্যকরী হতে পারে।
চলুন জেনে নেয়া যাক ডাস্ট অ্যালার্জি থেকে মুক্তির ঘরোয়া উপায়-
মধু
মধু আপনাকে মুক্তি দিতে পারে ডাস্ট অ্যালার্জির সমস্যা থেকে। সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে দুই টেবিল চামচ মধু খাবেন। আবার রাতে যখন ঘুমাতে যাওয়ার আগে দুই টেবিল চামচ মধু খান। রাতে মধু খাওয়ার পর পানি না খেয়ে থাকতে পারলে সবচেয়ে ভালো। যদি খেতেই হয় তবে হালকা গরম পানি পান করবেন।
ইউক্যালিপটাস অয়েল
প্রথমে ভেপারাইজারে পানি গরম করে তাতে ইউক্যালিপ্টাস এসেনশিয়াল অয়েল ঢেলে নিন। এরপর সেখান থেকে ভাপ নিন। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এভাবে ভাপ নিলে উপকার পাবেন। যদি আপনার ডাস্ট অ্যালার্জির সমস্যা খুব বেশি হয়ে থাকে তবে ঘর মোছার পানিতেও ইউক্যালিপ্টাস এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে নেবেন।
আপেল সাইডার ভিনেগার
আপেল সাইডার ভিনেগারের অন্যতম গুণ হলো এটি ডাস্ট অ্যালার্জি সারাতে সাহায্য করতে পারে। দুই টেবিল চামচ আপেল সাইডার ভিনেগার, এক গ্লাস হালকা গরম পানি ও এক চা চামচ মধু নিতে হবে। এরপর পানির সঙ্গে আপেল সাইডার ভিনেগার ও মধু মিশিয়ে ছোট ছোট চুমুকে পান করুন। এটি চাইলে মধু ছাড়াও খেতে পারেন। এই মিশ্রণ দিনে দুই-তিনবার খেতে পারেন। মৌসুম পরিবর্তনের সময় এই পানীয় নিয়মিত পান করলে ডাস্ট অ্যালার্জির ভয় অনেকটাই কমে যাবে।
ল্যাভেন্ডার এসেনশিয়াল অয়েল
ভেপারাইজার, পানি ও কয়েক ফোঁটা ল্যাভেন্ডার এসেনশিয়াল অয়েল নিন। প্রথমে ভেপারাইজারে পানি গরম করে ল্যাভেন্ডার এসেনশিয়াল অয়েল ঢেলে নিন। এরপর ভাপ নিন। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ভাপ নেবেন। ডাস্ট অ্যালার্জি খুব বেশি হলে গোসলের সময় হালকা গরম পানিতে ল্যাভেন্ডার এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে সেই পানি দিয়ে গোসল করতে পারেন।
ঘৃতকুমারী
অ্যালার্জির কারনে ত্বকে যে র্যাশ বা লালচে দাগ হয় সেই দাগ দূর করতে ঘৃতকুমারী পাতার রস গোসলের পানির সাথে মিশিয়ে ত্বকে লাগান, দাগ চলে যাবে ।
বিছানা পরিষ্কার রাখুন
অ্যালার্জির সহজ সমাধান হচ্চে বিছানা ও কাপড় পরিষ্কার রাখা। বিছানা বা বালিশ এগুলো সব সময় পরিষ্কার – পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা করুন । সপ্তাহে একবার এগুলো রোদে দিন ।
নিম পাতা
ত্বকের যে কোন সমস্যা সমাধানে অনেক কার্যকরী নিম পাতা। এ পাতায় ঔষধিগুণ সম্পন্ন হয়ে থাকে। অ্যালার্জী প্রতিরোধে নিম পাতা পেস্ট করে ত্বকে লাগালে উপকার পাবেন।
এছাড়া যে কোনো ওষুধ খাওয়ার আগে চিকিৎসকের কাছ থেকে পূর্বেই মেডিসিনের সাইড ইফেক্ট সম্পর্কে জেনে নিন । ভ্রমনের সময় অ্যালার্জি প্রতিরোধক মেডিসিন সবসময় সাথেই রাখুন ।