করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণ থেকে এবার বাদ যায়নি শিশুরাও। নবজাতক থেকে শুরু করে বড় বাচ্চারাও এখন করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে। সেই সঙ্গে বৃষ্টির মৌসুমে ডেঙ্গুর উপদ্রবও বেড়ে গেছে। অধিকাংশ শিশুরা ডেঙ্গু উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। কিন্তু প্রাথমিকভাবে শিশুরা ডেঙ্গু না করোনায় আক্রান্ত হয়েছে, তা অনেক বাবা-মা বুঝতে পারেন না।
বাচ্চাদের কোন উপসর্গে ডেঙ্গু ও করোনা আক্রান্ত হওয়া নির্ধারণ করা যাবে, তা নিয়ে কথা বলেছেন আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক এমবিবিএস, ডিসিএইচ, এফসিপিএস (পেডিয়াট্রিক্স) ডা. কুন্তল রায়। সংবাদ প্রকাশের বিশেষ আয়োজন ‘ডাক্তার আছেন’- অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে তিনি শিশুদের ডেঙ্গু ও করোনার উপসর্গ সম্পর্কে বিস্তারিত কথা বলেছেন। ‘করোনা ও ডেঙ্গুতে শিশুস্বাস্থ্য’ বিষয়ের ওপর এই আলোচনায় সঞ্চালনায় ছিলেন সানজিদা শম্পা।
শিশুদের ডেঙ্গু ও করোনা উপসর্গ কেমন হয়, এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. কুন্তল রায় বলেন, “করোনায় শিশুদের সাধারণ উপসর্গ জ্বর থাকবে। জ্বরে শরীরের তাপমাত্রা বেশি-কম হতে পারে। ১০২ ডিগ্রির কমও হতে পারে। আবার এর ওপরের শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যেতে পারে। সেই সঙ্গে শিশুদের ক্ষুধামান্দ্য, দুর্বলতা থাকে। এছাড়া করোনার সাধারণ উপসর্গ সর্দি, কাশি, গন্ধ না পাওয়া, শ্বাসকষ্ট বাচ্চাদের মধ্যে দেখা যেতে পারে। বাচ্চাদের শ্বাসপ্রশ্বাস কেমন ভাবে নিচ্ছে, শ্বাসপ্রশ্বাসের গতি কেমন, বুকের খাঁচা ডেবে যাচ্ছে কি না, বুকের নিচের অংশটুকু নিচের দিকে ঢুকে যাচ্ছে কি না, খেয়াল রাখতে হবে। সেই সঙ্গে বমিভাব, খাবারের স্বাদ না পাওয়া, শরীর ব্যথা থাকতে পারে। তাই এই সময় শিশুরা কান্নাকাটিও বেশি করে।”
“অন্যদিকে শিশুর যদি ডেঙ্গু হয় সে ক্ষেত্রেও জ্বর থাকে। তবে ক্লাসিক্যাল ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে উপসর্গ থাকে। কিন্তু নন ক্লাসিক্যাস ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে কোনো উপসর্গ বোঝা যায় না। ডেঙ্গুর সময় তীব্র জ্বর হয়। ১০২ ডিগ্রির ওপরে ১০৫ ডিগ্রি পর্যন্ত জ্বর উঠতে পারে। জ্বরটা থাকবে সাধারণত ৫ থেকে ৭ দিন। এরপর মাঝে এক-দুই দিন বিরতি দিয়ে আবারও জ্বর হতে পারে। ডেঙ্গুতে প্রচণ্ড শরীর ব্যথা হয়। এটা বড়দেরও হয়। হাড় ভেঙে যাচ্ছে এমন উপলব্ধি হবে। সেই সঙ্গে মাথা ব্যথা থাকবে, চোখে ব্যথা থাকবে। পুরো শরীরের জয়েন্টে ব্যথা থাকবে। বমি হওয়া, ডায়রিয়া হওয়া, পেটে ব্যথা হতে পারে।”
শিশুদের ডেঙ্গু হয়েছে না করোনা হয়েছে, তা বোঝার উপায় কী, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “ডেঙ্গুতে সাধারণত সর্দি, কাশি, গলাব্যথা, খাবারের গন্ধ ও স্বাদ না পাওয়া এই উপসর্গগুলো থাকে না। যা করোনার প্রধান উপসর্গ ধরা হয়। শিশুদের রোগের উপসর্গ দেখেই বুঝে নেওয়া যাবে ডেঙ্গু না করোনা হয়েছে। সেই অনুযায়ী চিকিৎসা চালাতে হবে।”