ডায়াবেটিস একটি দীর্ঘমেয়াদি জটিল রোগ। শরীরের প্রতিটি অঙ্গেরই ক্ষতি করে এই রোগ। রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় শরীরের প্রতিটি অঙ্গেরই কার্যক্ষমতা কমে যায়। এই রোগে ইনসুলিন নিজের কাজ ঠিকমতো করতে পারে না। তাই রক্তে সুগার বেড়ে যায়।
খারাপ জীবনযাত্রা ও খাবারদাবারের অভ্যাসের কারণে এই রোগে বেশি হয় বলে জানান বিশেষজ্ঞরা। একবার এই রোগ হলে তা নিরাময় সম্ভব নয়। তবে ডায়াবেটিস রোগ হলে প্রথম থেকেই নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়। মানুষের অবহেলায় এই রোগ নিয়ন্ত্রণ না থাকলেই হার্ট, কিডনি, চোখ, স্নায়ু ইত্যাদি অঙ্গ ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকা সবচেয়ে জরুরি।
ডায়াবেটিস রোগী চোখের অন্ধত্বের কারণ হতে পারে। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের কারণে চোখের অবস্থা দ্রুত খারাপ হয়। বিশেষজ্ঞদের বলেন, হাই ব্লাডসুগার চোখের অন্দরের রক্তনালীকে দুর্বল করে দেয়। এক্ষেত্রে আলোর প্রতি সংবেদনশীল রেটিনারও ক্ষতি হয়। রেটিন লিক করতে পারে বা রেটিনা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এই সমস্যা হলো ডায়াবোটিক রেটিনোপ্যাথি।
ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি মূলত অনিয়ন্ত্রিত ব্লাডসুগারের কারণেই বেশি হয়। এটি শরীরের ছোটছোট সব রক্তনালির ক্ষতি করে। এর প্রভাবে চোখের রক্তনালি থেকে রক্ত এবং অন্যান্য তরল বেরতে থাকে। চোখের রেটিনা এই তরল শোষণ করে নেয়। তবে খুব বেশি তরল থাকলে তা শোষণ করতে পারে না রেটিনা। তখনই চোখের একটি বিশেষ অংশ ম্যাকুলা ফুলে যায়। সেই অংশটি মোটা হয়ে যায়। দীর্ঘদিন এই অবস্থা থাকলে মানুষের চোখের দৃষ্টি কমতে থাকে।
এই সমস্যার চিকিৎসা শুরুতেই না করলেই হতে পারে বিপদ। হতে পারে অন্ধত্ব। তবে আধুনিক ওষুধ ও সার্জারির মাধ্যমে এই রোগ সারানো যাবে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বয়স বাড়লে এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা না হলে চোখে এমন সমস্যা দেখা দিতে পারে। এক্ষেত্রে ডায়াবেটিস রোগীর নিয়মিত চেকআপে থাকতে হবে। চোখের যেকোনো সমস্যায় চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। বছরে অন্তত একবার চোখের পরীক্ষা করাতে হবে। তবেই স্থায়ী অন্ধত্ব থেকে মুক্তি সম্ভব।
সূত্র: হেলথ জোন