বাজারে নলেন গুড়, আখের গুড়, পাটালি, ভেলি গুড় পাওয়া যায়। প্রতিটি গুড়েরই নিজস্ব স্বাদ ও গন্ধ রয়েছে। পিঠা তৈরিতে গুড় সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয়। অনেকে তো আচারেও গুড় দিয়ে থাকেন। গুড়ের চা কিন্তু বেশ জনপ্রিয়। নানা খাবারে গুড়ের ব্যবহার নতুন নয়।
স্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞরা বলছেন, গুড় শুধু সুস্বাদুই নয়, নান স্বাস্থ্য গুণেও ভরপুর। এমনকি চিনির চেয়ে গুড় খাওয়া স্বাস্থ্যকর। গুড়ে আয়রন, পটাসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাঙ্গানিজ, ক্যালসিয়াম, সেলেনিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, সোডিয়াম, ফোলেট, ভিটামিন-বি কমপ্লেক্স এবং এনার্জির দুর্দান্ত উৎস থাকে। তাই নিয়মিত গুড় খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। তবে তা অবশ্যই খাটি গুড় হতে হবে।
গুড় আমাদের স্বাস্থ্যের কী কী উপকার করে, তা জানাব এই আয়োজনে_
শ্বাসকষ্ট প্রতিরোধ
গুড় শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা প্রতিরোধে বেশ উপকারী। নিয়মতি গুড় খেলে হাঁপানি এবং ব্রঙ্কাইটিস থেকে মুক্তি দেয়। তিলের সঙ্গে গুড় খাওয়া অত্যন্ত উপকারী। এটি রেসপিরেটরি সমস্যার আদর্শ চিকিৎসা হতে পারে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে
গুড়ে পটাশিয়াম এবং সোডিয়াম উপস্থিত রয়েছে। যা শরীরে অ্যাসিডের ভারসাম্যতা বজায় রাখে। এতে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রিত থাকে। হাই বা লো ব্লাড প্রেসারে যারা ভোগেন, তাদের জন্য় নিয়মিত গুড় খাওয়া ভালো।
এনার্জির দারুণ উৎস
গুড় ধীরে ধীরে শরীরে এনার্জির সরবরাহ করে। যা দীর্ঘ সময়ের জন্য শরীরের স্থায়ী থাকে। গুড় রক্তে শর্করার মাত্রা এক ধাক্কায় বৃদ্ধি করে না। বরং ধীরে ধীরে রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি করে। তাছাড়া গুড় ক্লান্তি প্রতিরোধ করতেও সহায়তা করে।
ওজন নিয়ন্ত্রণে
ওজন নিয়ন্ত্রণে গুড় পরিমিত সেবন করুন। এটি পটাসিয়ামের একটি ভালো উৎস। যা ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্যতা বজায় রাখে। এটি মেটাবলিজম বৃদ্ধি করে এবং পেশী গঠনে সহায়তা করে। শরীরে পটাশিয়াম বৃদ্ধি পেলে পানির ধারণের ক্ষমতা কমাতে সহায়তা করে। যা ওজন কমাতে গুরুত্বপূর্ণ।
ঋতুস্রাবের ব্যথা কমায়
ঋতুস্রাবের যন্ত্রণা থেকে মুক্তির প্রাকৃতিক উপায় হিসেবে গুড় খাওয়া যেতে পারে। মাসিকের আগে মেজাজ পরিবর্তন কিংবা হতাশায় ভুগলে সামান্য গুড় খেয়ে নিন। এটি এন্ডোরফিন নিঃসরণ করতে সহায়তা করে। যা শরীরকে রিল্যাক্স করে।
রক্তাল্পতা প্রতিরোধে
গুড় আয়রন এবং ফোলেট সমৃদ্ধ। যা রক্তাল্পতা প্রতিরোধে সহায়তা করে। চিকিৎসকেরা প্রায়ই কিশোর-কিশোরী এবং গর্ভবতী মহিলাদের গুড় খাওয়ার পরামর্শ দেন।
জয়েন্টের ব্যথা কমায়
আর্থ্রাইটিস বা জয়েন্টের ব্যথা উপশমের ক্ষেত্রে গুড় অত্যন্ত কার্যকরী। এটি ব্যথা থেকে স্বস্তি দেয়। আদার সঙ্গে গুড় মিশিয়ে খান। উপকার পাবেন।
সর্দি-কাশির সমস্যা
সর্দি-কাশি ও ফ্লু-এর নিরাময়েও গুড় বেশ উপকারী। শরীরে তাপ উৎপাদন করে গুড়। যা ঠান্ডার বিরুদ্ধে লড়াই করে। ভালো ফল পেতে, গরম দুধ কিংবা চায়ের সঙ্গে গুড় মিশিয়ে খেতে পারেন।
শরীরকে পরিশুদ্ধ করে
গুড় সেরা প্রাকৃতিক পরিষ্কারক হিসেবে কাজ করে। খাবার খাওয়ার পর গুড় খেলে, এটি অন্ত্র, পেট, খাদ্যনালী, ফুসফুস এবং রেসপিরেটরি ট্র্যাক্ট থেকে সব ধরনের অবাঞ্ছিত কণা অপসারণ করতে সহায়তা করে। এছাড়াও গুড়ের প্রাকৃতিক মিষ্টতা শরীর থেকে ক্ষতিকারক টক্সিন বের করে দেয়। এতে লিভার ডিটক্সিফাই হয়।