একজিমা এমন একটি চর্মরোগ যা নিয়ে অনেকেই ভুগে থাকেন। শীতের মধ্যে যেনো এই সমস্যা আরও মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। একজিমা সাধারণত হাতে ও মুখে হয়ে থাকে। মেডিকেলের ভাষায় একে এটপিক ডার্মাটাইটিস বলে। স্থানীয় ভাষায় একজিমা চর্ম রোগটিকে পামা, বিখাউজ, কাউর ঘা-ও বলা হয়।
একজিমা মূলত ত্বককে অনেক শুষ্ক করে দেয়। একজিমার প্রকোপ বেশি হলে ত্বক এতোটাই শুষ্ক হয়ে যায় যে শরীর ফেটে রক্ত বের হয়। একজিমা হলে ত্বক জ্বলে, চুলকায়, ত্বকে শুষ্ক প্যাচেস দেখা দেয়। বেশিরভাগ সময় পরিবারের শিশুদের মধ্যে এই রোগ বেশি দেখা যায়। সাধারণত ০-১০ বছরের বাচ্চাদের শরীরে, মুখের ত্বকে বেশি দেখা দেয়। বড়দের যেকোনো সময় দেখা দিতে পারে একজিমা। একজিমা প্রতিরোধে প্রয়োজন লাইফস্টাইলে কিছু পরিবর্তন, যার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে থাকবে আপনার একজিমার সমস্যা।
চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক একজিমা প্রতিরোধে লাইফ স্টাইলে যেসব পরিবর্তন আনবেন, সে সম্পর্কে-
- শরীরের একজিমা হলে কোন প্রকার সিল্ক, পলেস্টার জামা পরা যাবে না। সব সময় সুতি কাপড় পরতে হবে। কাপড় এমনভাবে ধুতে হবে যাতে করে কোন প্রকার ডিটারজেন্ট কাপড়ে না লেগে থাকে। কেননা ডিটারজেন্ট-এর কেমিক্যাল শরীরে চুলকানি সৃষ্টি করতে পারে।
- কাজের অথবা মানসিক স্ট্রেস থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে হবে। প্রতিদিনের কাজের মধ্যে কিছু সময় বের করে চোখ বন্ধ করে জোরে জোরে শ্বাস নিন এবং ইয়োগা করুন মানসিক শান্তির জন্য। নিয়মিত গান শুনুন। প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমান।
- রোদে, ধুলোবালিতে যতটা সম্ভব কম যাবেন।
- রুমে এয়ার কন্ডিশন কম ব্যবহার করুন। গোসল করার সময় কুসুম গরম পানি ব্যবহার করুন।
- প্রাত্যহিক জীবনে যেসব প্রসাধনী ব্যবহার করছেন সেগুলোর দিকেও অনেক খেয়াল রাখতে হবে। এন্টিব্যাক্টেরিয়াল, ডিওডেরন্ট জাতীয় জিনিস ব্যবহার করা পরিহার করতে হবে। কেননা এরা ত্বককে আরও শুষ্ক করে দেয়।
- যেসব প্রসাধনীতে সোডিয়াম লরিয়েট সালফেট উপাদানটি আছে সেসব সব ধরনের প্রসাধনী ব্যবহার করা বাদ দিতে হবে। এই উপদানটি প্রায় সব ধরনের সাবান এবং শ্যাম্পুতে আছে। এটি ফেনা উৎপাদনে সহায়তা করে। কিন্তু এই উপাদান ত্বকের প্রোটিন ভেঙ্গে দেয় এবং ত্বককে সেন্সেটিভ এবং ড্রাই করে ফেলে।
- পেরাবেন যুক্ত প্রসাধনী ব্যবহার করা বাদ দিতে হবে। এই উপাদান আজকাল লিপস্টিক থেকে শুরু করে শ্যাম্পুতেও আছে। এটি ত্বকের জন্য এতোটাই ক্ষতিকর যে ক্যানসারও হতে পারে।
সূত্র: প্রথমআলো