ম্যাগনেসিয়াম শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি খনিজ। যা বিভিন্ন শারীরিক ক্রিয়াকলাপে জড়িত। এটি পেশী ফাংশন, স্নায়ু ফাংশন, রক্তে শর্করার মাত্রা এবং রক্তচাপকে ঠিক রাখে। সামগ্রিক স্বাস্থ্য এবং সঠিক শারীরিক ক্রিয়াকলাপের জন্য ম্যাগনেসিয়ামের স্থির সরবরাহ নিশ্চিত করা অপরিহার্য। এর অভাব হলে বিভিন্ন শারীরিক ও মানসিক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা জানান, ম্যাগনেসিয়াম শরীরের পেশী এবং স্নায়ু কীভাবে কাজ করে তা নিয়ন্ত্রণ করে। এটি হাড়কে মজবুত রাখে, হৃদপিণ্ডকে সুস্থ রাখে এবং রক্তে শর্করাকে স্বাভাবিক রাখে। খাবার এবং পানীয়ের মাধ্যমে শরীর প্রয়োজনীয় ম্যাগনেসিয়াম গ্রহণ করতে পারে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পরিপূরক হিসেবেও খনিজটি গ্রহণ করা জরুরি।
শরীরে ম্যাগনেসিয়ামের অভাব হচ্ছে বোঝা যাবে কিছু সাধারণ লক্ষণে। যেমন_
পেশির খিঁচুনি ও দুর্বলতা
ম্যাগনেসিয়ামের অভাবে পেশির খিঁচুনি ও দুর্বলতা দেখা দেয়। বিশেষ করে রাতে ঘুমের মধ্যে পায়ে খিঁচুনির মতো সমস্যা হতে পারে।
ক্লান্তি ও দুর্বলতা
ম্যাগনেসিয়ামের অভাবে হলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত হয়ে যায়। অনবরত ক্লান্তিবোধ ও দুর্বলতা এ অভাবের লক্ষণ হতে পারে।
মানসিক উদ্বেগ
ম্যাগনেসিয়ামের অভাবে মানসিক উদ্বেগ, দুশ্চিন্তা এবং বিষণ্ণতার ঝুঁকি বাড়ে। এটি মানসিক স্বাস্থ্যকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করে।
হৃদস্পন্দন অনিয়ম
ম্যাগনেসিয়ামের অভাবে হৃদস্পন্দন অনিয়মিত হতে পারে। এটি আঘাতজনিত হৃৎপিণ্ডের সমস্যার ঝুঁকি বাড়ায়।
উচ্চ রক্তচাপ
ম্যাগনেসিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এর অভাবে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা দেখা দেয়। যা দীর্ঘমেয়াদে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
হাড়ের ঘনত্ব কমে যাওয়া
ম্যাগনেসিয়ামের অভাবে ক্যালসিয়াম শোষণ কমে যায়। যা হাড়ের ঘনত্ব হ্রাস করে এবং অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি বাড়ায়।
ক্ষুধা হ্রাস
ম্যাগনেসিয়ামের ঘাটতির ফলে ক্ষুধা কমে যেতে পারে। যা দীর্ঘমেয়াদে ওজন হ্রাসের দিকে নিয়ে যেতে পারে।
ঘুমের সমস্যা
ম্যাগনেসিয়ামের অভাবে অনিদ্রা বা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে, যা সার্বিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে।
মাথাব্যথা
ম্যাগনেসিয়ামের অভাবে মাইগ্রেন বা তীব্র মাথাব্যথা হতে পারে। সারাদিনের কিছু সময় পরপর এমনটা হতে পারে।
স্মৃতিভ্রংশ
ম্যাগনেসিয়ামের অভাবে মস্তিষ্কে সংকেত সঞ্চালনে সমস্যা দেখা দেয়, যা স্মৃতিভ্রংশ বা ভুলে যাওয়ার সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা জানান, এই লক্ষণগুলির যেকোনো একটি বা একাধিক দেখা দিলে, দ্রুত ম্যাগনেসিয়ামের স্তর পরীক্ষা করে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।