শাকসবজি স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। প্রতিদিনই খাদ্যতালিকায় শাক সবজি রাখার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদরা। তবে এসব শাক সবজি খেতে অনেকের জন্য আবার নিষেধাজ্ঞাও রয়েছে। বিশেষ করে অসুস্থ ব্যক্তির জন্য শাক সবজি খেতেও চিন্তা করতে হবে। কারণ সব শাক সবজি সব রোগীর জন্য উপযুক্ত নাও হতে পারে। যেমন পালংশাক। এই শাকের অনেক স্বাস্থ্যগুণ রয়েছে। পালংশাক দিয়ে অনেক সুস্বাদু পদও রান্না হয়। তাই এই শাক অনেকেরই পছন্দ। কিন্তু পালংশাক খাওয়ার বিষয়েও সতর্কতা রয়েছে।
স্বাস্থ্যবিদরা পরামর্শ দেন, পালংশাক রান্না করার আগে ভালভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করা জরুরি। এই শাকের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন কে রয়েছে। যা হাড়ের গঠনের জন্য উপকারী। তাই হাড় সহজে ভঙ্গুর হয় না।
পালংশাকের মধ্যে প্রচুর আয়রন থাকে। এই মিনারেলস শরীরে হিমোগ্লোবিন মাত্রা ঠিক রাখে। রক্তাল্পতা দেখা দেয় না। অ্যানিমিয়া হয় না। ফাইবারের পরিমাণ বেশি। তাই হজমের সমস্যা দূর হবে। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও সমাধান হয়।
এই শাকে ক্যালোরি কম থাকে। তাই ওজন বাড়ে না। চোখের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। ব্লাড সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। ডায়াবেটিস রোগীরা প্রতিদিন এই শাক খেতে পারে। এছাড়াও এটি বেস্ট ক্যানসার, প্রস্টেট ক্যানসারের মতো জটিল রোগের ঝুঁকি কমায়।
তবে স্বাস্থ্যবিদরা জানান, পালংশাক উপকারী হলেও তা অতিরিক্ত খাওয়া একদমই উচিত নয়। আবার কিছু রোগীর জন্য পালংশাক খাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
· পালং শাকে অক্সালিক অ্যাসিড থাকে। যা উদ্ভিদে প্রাকৃতিকভাবে ঘটে যাওয়া যৌগ। শরীরে এই যৌগের পরিমাণ স্বাভাবিক মাত্রা ছাড়িয়ে গেলে অন্যান্য খনিজ শোষণের ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে। অক্সালিক অ্যাসিড জিঙ্ক, ম্যাগনেসিয়াম এবং ক্যালসিয়ামের সঙ্গে আবদ্ধ হলে খনিজ ঘাটতি হয়।
· এই শাকে হিস্টামিন থাকে। যা শরীরের কিছু কোষে পাওয়া যায় এমন একটি রাসায়নিক। এতে সামান্য অ্যালার্জি হতে পারে।
· পালং শাক বেশি খেলে তা গ্যাসের সমস্যা করে। পেট ফোলাভাব এবং ক্র্যাম্পের কারণ হতে পারে। এই শাক উচ্চ ফাইবারযুক্ত। শরীরে অক্সালিক অ্যাসিড বেশি থাকে, তখন এটি সিস্টেম থেকে বের করে দেওয়া আমাদের শরীরের জন্য কঠিন হয়। এর ফলে কিডনিতে ক্যালসিয়াম অক্সালেট স্টোন জমা হয়। যা কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়।
· পালং শাকেও প্রচুর পিউরিন রয়েছে। এটি এক ধরনের যৌগ। এই দুটি যৌগ গেঁটেবাত বাড়িয়ে তুলে। জয়েন্টে ব্যথা, ফোলাভাব এবং প্রদাহে ভুগতে পারে।
· পালংশাক ভিটামিন কে-এর একটি সমৃদ্ধ উৎস হওয়ায়, অ্যান্টিকোয়াগুল্যান্ট ওষুধের সঙ্গে প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে। যা রক্ত পাতলা করার উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়। এটি রক্তে উপস্থিত অন্যান্য জমাট বাঁধার কারণকেও প্রভাবিত করে।