বর্তমান সময়ে ছেলেমেয়েদের বয়ঃসন্ধিকাল এগিয়ে আসছে। এর পেছনে নানা কারণও রয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলছে প্রতিদিনের জীবনযাত্রা। সেই সঙ্গে অনিয়মিত, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস, অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণে বয়ঃসন্ধি কাল এগিয়ে আসছে।
সাধারণত বয়ঃসন্ধি একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। যা মেয়েদের ৮ বছর বয়স থেকে হয়। আর ছেলেদের হয় ৯ বছর বয়স থেকে। এর আগে হওয়া মোটেও স্বাভাবিক নয় বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে বর্তমান সময়ে অনেক মেয়েদের ৮ বছরের আগেই বয়ঃসন্ধি শুরু হয়ে যাচ্ছে। যার কারণে পিরিয়িড হচ্ছে, শারীরিক পরিবর্তনগুলোও আগেই দেখা যাচ্ছে। যা প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ার বাইরে। যদিও এর পেছনের কারণগুলো স্পষ্ট। যেমন_
· স্থূলতার কারণে ছেলে এবং মেয়ে উভয়ের মধ্যে বয়ঃসন্ধির প্রক্রিয়া অনেক আগেই শুরু হতে পারে। শরীরে জমে থাকা ফ্যাট ইস্ট্রোজেনের ক্ষরণ ঘটায়। এতে মেয়েদের স্তনের বিকাশ ঘটে। সেই সঙ্গে পিরিয়ডও শুরু হতে পারে।
· বর্তমান সময়ে মেয়েরা বাইরের ফাস্ট ফুড খেতে বেশি পছন্দ করে। মনের ক্ষুদা মেটাতে অনলাইনে অর্ডার করেও বাড়িতে বসে বাইরের খাবার খাচ্ছে। আবার বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা জমাতেও রেস্তোরাঁয় গিয়ে ভিড় করছে। বাইরের খাবার বেশি খাওয়ায় শরীরে পুষ্টির অভাব হচ্ছে। আর ফ্যাট জমছে। যা মেয়েদের পিরিয়ডের সময় এগিয়ে দিচ্ছে।
· বর্তমান সময়ে প্লাস্টিক, পার্সোনাল কেয়ার প্রোডাক্ট ও ফুড প্যাকেজিংয়ে নানা রাসায়নিকের মিশ্রণ থাকে। যা ব্যবহারের ফলে শরীরে হরমোনের তারতম্য সৃষ্টি করছে। এর জন্যও বয়ঃসন্ধিকাল এগিয়ে আসছে।
· শরীরের নানা রকম ভিটামিনের অভাব থেকে বয়ঃসন্ধিকাল এগিয়ে আসতে পারে। অপুষ্টির কারণে বয়ঃসন্ধিকাল পিছিয়ে যেতে পারে। আবার এগিয়েও আসতে পারে। কারণ অপুষ্টির জন্যেই শরীরে প্রজনন হরমোন বেশি ক্ষরিত হয়। যা থেকে সময়ের আগেই শুরু হতে পারে বিভিন্ন শারীরিক পরিবর্তনগুলো।
· বর্তমান সময়ে পড়াশোনার ক্রমবর্ধমান স্ট্রেস বাড়ছে। সেই কারণেও মেয়েদের ঋতুস্রাব এগিয়ে আসছে। কারণ স্ট্রেসের থেকে কর্টিসলের ক্ষরণ বাড়ছে। ফলে হরমোনের তারতম্যের প্রভাবে সময়ের আগেই শুরু হচ্ছে বয়ঃসন্ধিকাল।
· বর্তমান সময়ে বাচ্চারা সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা কনটেন্ট দেখছে। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য থাকা কনটেন্টগুলোও দেখতে পাচ্ছে। যা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। এসব কনটেন্ট বাচ্চাদের মানসিক দিকে প্রভাব ফেলে। যার কারণে এগিয়ে যাচ্ছে বয়ঃসন্ধিকাল।
· সন্তানের বয়ঃসন্ধিকাল এগিয়ে আসার আরও একটি কারণ অলসতা। সন্তানকে অ্যাক্টিভ রাখতে হবে। প্রয়োজনীয় পুষ্টির পাশাপাশি শরীরচর্চার করার দিকেও গুরুত্ব দিতে হবে।