সারাদিন রোজা রাখার পর সূর্যাস্তের সময় ইফতার করা হয়। ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা রমজান মাসজুড়ে এই নিয়মেই রোজা পালন করেন। ইফতার করার সময় প্রত্যেক মুসলমান প্রথমেই খেজুর খেয়ে রোজা ভাঙেন। এরপর পানি ও ইফতারের বাকি পদ খান। তবে জানেন কি, প্রথমেই খেজুর খেয়ে কেন রোজা ভাঙা হয় কিংবা ইফতার শুরু করা হয়? এর কারণ অনেকেই জানেন না।
খেজুর দিয়ে রোজা গোটা বিশ্বজুড়ে একটি প্রচলিত রীতি। রমজান মাসে খেজুরের চাহিদাও দ্বিগুণ বেড়ে যায়। কারণ খেজুর খেয়ে ইফতার শুরু করার পেছনে ধর্মীয় কারণ রয়েছে। আবার পুষ্টিগত তাৎপর্যও রয়েছে।
হাদিস অনুযায়ী, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) খেজুর দিয়ে ইফতার শুরু করতেন। তাই রমজান মাসে খেজুর দিয়ে ইফতার শুরু করা সুন্নত হিসেবেই দেখা হয়। তবে যদি খেজুর না পাওয়া যায়, তাহলে যেকোনো হালাল খাবার খেয়ে কিংবা শুধু পানি দিয়েও ইফতার করা যায়।
রাসূল (সাঃ) বলেছেন, "তোমাদের কেউ রোজা রাখলে, খেজুর দিয়ে যেন ইফতার করে; খেজুর না হলে, পানি দিয়ে ইফতার করো।"
খেজুরের পুষ্টিগুণও অনেক। সারাদিন রোজা রাখার পর খেজুর খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। খেজুরে গ্লুকোজ, ফ্রুকোজ, এবং সুক্রোজ রয়েছে। যা দ্রুত রক্তে চিনির পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। শরীরে শক্তি জোগায়। শরীর দ্রুত সতেজ হয়।
পুষ্টিবিদরা জানান, খেজুর হচ্ছে আঁশ, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ভিটামিনের মতো অতি প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানের উত্স। যা শরীরের ক্ষয় পূরণ করে এবং শরীরের স্বাভাবিক কার্যক্রম ঠিক রাখে। এছাড়াও খেজুরে প্রচুর পানি থাকে। যা সারাদিনের পানির ঘাটতি পূরণ করে। খেজুরে বিদ্যমান চিনি সহজে পরিপাকযোগ্য। তাই খেজুর খেলে পরিপাক ক্ষমতা বেড়ে যায়। পাকস্থলীতে সমস্যা হয় না। পাশাপাশি খেজুরে আঁশ থাকায় কোষ্ঠকাঠিন্যও দূর হয়।
পুষ্টিবিদরা আরও জানান, খেজুরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি উপাদান থাকে। যা শরীরের কোষগুলোকে যেকোনো রকমের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। এটি শারীরিক এবং মানসিকভাবে সুস্থ রাখে। তাই রমজানে রোজা রাখার পর খেজুর খাওয়া অত্যন্ত উপকারী হয়।