আমাদের রক্তে সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্লোরাইড, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ইত্যাদি খনিজ লবণ নিখুঁত ভারসাম্য বজায় রেখে চলে। একজন সুস্থ পূর্ণবয়স্ক মানুষের শরীরে ৩.৫-৫.১ এমজি/ডিএল পটাশিয়াম ও ১৩৫-১৪৫ এমজি/ডিএল সোডিয়াম থাকা উচিত। এই মাত্রায় তারতম্য হলেই সমস্যা দেখা দেয়। বিভিন্ন কারণে রক্তে এগুলোর পরিমাণ কমে যেতে পারে। এসব লবণের যে কোনও একটি বা একসঙ্গে দু’টির ভারসাম্য নষ্ট হয়ে গেলে বিভিন্ন জটিল অসুখবিসুখ হতে পারে। খাবারের মাধ্যমে শরীর এসব লবণ আমরা পাই। কিডনি শরীরের খনিজগুলোর সঠিক ভারসাম্য রাখতে প্রস্রাবের মাধ্যমে অতিরিক্ত পটাশিয়াম অপসারণ করে।
সোডিয়াম-পটাশিয়াম কেন কমে
সোডিয়াম ও পটাশিয়াম দু’টিই খুব গুরুত্বপূর্ণ ইলেকট্রোলাইট। এরা যেমন শরীরে কোষের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা বজায় রাখতে সাহায্য করে, তেমনই মস্তিষ্কে কোষের কার্যক্ষমতাও নির্ভর করে এই সোডিয়াম–পটাশিয়ামের উপর।
বমি, পাতলা পায়খানা কিংবা অতিরিক্ত ঘামে শরীর থেকে বেরিয়ে যেতে পারে সোডিয়াম। এছাড়া খাবারের মাধ্যমেই যেহেতু লবণ শরীরে প্রবেশ করে, তাই অপর্যাপ্ত খাদ্য গ্রহণের কারণেও কমে যেতে পারে সোডিয়ামের মাত্রা। এছাড়া কিডনি বা ডায়াবেটিসের মতো রোগ থাকলেও সোডিয়ামের পরিমাণ কমতে থাকে।
ডায়রিয়া বা অত্যধিক বমি হলে রক্তে সোডিয়াম এবং পটাশিয়ামের মাত্রা কমতে পারে। বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক, স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ বা রক্তচাপ কমানোর ওষুধ খান খেলেও সোডিয়াম-পটাশিয়ামের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে।
কীভাবে বুঝবেন রক্তে সোডিয়াম-পটাশিয়ামের ঘাটতি হচ্ছে
- রক্তে সোডিয়ামের মাত্রা কমে গেলেই হজমশক্তির সমস্যা, মাথা ধরা, বমি বমি ভাব, প্রচণ্ড দুর্বলতা দেখা দেয়।
- অসংলগ্ন আচরণ, আপনজনদের চিনতে না পারা, এলোমেলো কথা বা উত্তেজনা ইত্যাদিও সোডিয়াম-পটাশিয়ামের ঘাটতির লক্ষণ।
- পেশিতে টান, পেশির অসড়তা, খিঁচুনিও হতে পারে।
কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া - বয়স্ক ব্যক্তিরা যদি হঠাৎ অস্বাভাবিক আচরণ করেন বা কথা কমে যায়, নির্জীব হয়ে পড়েন বা স্বাভাবিকের চেয়ে কম মিথস্ক্রিয়া করেন
তাই পটাশিয়াম, সোডিয়ামের মাত্রা বারবার ওঠানামা করলে দ্রুতই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। এ সমস্যায় রোগীর প্রতিমাসে একবার করে রক্ত পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া জরুরি।