ক্ষুধা লাগলে কেন মেজাজ খিটখিটে হয়


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: অক্টোবর ৪, ২০২৪, ০৮:৪১ পিএম
ক্ষুধা লাগলে কেন মেজাজ খিটখিটে হয়
সূত্র: সংগৃহীত

ক্ষুধা লাগলে ক্লান্তিবোধ হয়। সেই সঙ্গে মেজাজটাও বিগড়ে যায়। প্রায় অধিকাংশ মানুষেরই ক্ষুধা সহ্য হয় না। কিছু খাওয়ার আগ পর্যন্ত তাদের মেজাজ খিটখিটে থাকে। এর পেছনে কারণ কি জানেন? বিশেষজ্ঞরা জানান, ক্ষুধার্ত অবস্থায় শরীরে ক্লান্তি, বিভ্রান্তি বা রাগের মতো আবেগগুলো সক্রিয় থাকে। বিশেষ করে শরীরে গ্লুকোজের মাত্রা কমে যায়। শরীর তা পুনরুদ্ধারে ধারাবাহিক কিছু প্রতিক্রিয়া দেখায়। যার কারণে মেজাজ খিটখিটে হয়ে উঠে।

সাধারণত গ্লুকোজ কোষের শক্তির প্রধান উৎস। গ্লুকোজের ওপর মস্তিষ্ক একচেটিয়া নির্ভর করে। এর মাত্রা কমে গেলে মস্তিষ্ক তৈরি করা ১০০ বিলিয়ন স্নায়ু কোষের কাজ ব্যাহত হয়। তখনই দুর্বল লাগে আর কোনো কিছুই ভালো লাগে না, মেজাজ খিটখিটে হয়ে থাকে। মাথা ঘুরে এবং মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটে। এমন লক্ষণ দেখা গেলেও বুঝতে হবে মস্তিষ্ক পর্যাপ্ত পরিমাণে গ্লুকোজ পাচ্ছে না। মানে ক্ষুদা লেগেছে।

বিশেষজ্ঞরা জানান, দীর্ঘ সময়ের জন্য গ্লুকোজ সরবরাহে ঘাটতি হলে কোমায় চলে যাওয়ার সম্ভাবনাও থাকে। কিছু লক্ষণ ক্ষুধা বার্তা নিয়ে শরীরকে সংকেত প্রদান করে এবং বিভিন্ন পুষ্টির গন্তব্য কোষে পৌঁছানোর মহাসড়ক হয়ে কাজ করে। ওই সময় বেশকিছু মনস্তাত্ত্বিক প্রতিক্রিয়া হয়।

বিশেষজ্ঞরা আরও জানান, শরীরের মলিকিউলার পর্যায়ে বিভিন্ন হরমোন নিঃসৃত হয়। এর মধ্যে ঘ্রেলিন হরমোন পাকস্থলীর কোষ থেকে উৎপাদিত হয়ে হজমের প্রক্রিয়ায় কাজ করে। এই প্রাকৃতিক যৌগ ক্ষুধার অনুভূতি সৃষ্টি করে এবং খাবার গ্রহণের মাধ্যমে শরীরে শক্তির সঞ্চার করে। তাই ক্ষুধা লাগলে ঘ্রেলিন হরমোন পরোক্ষভাবে অ্যাড্রিনাল গ্রন্থি দ্বারা উৎপাদিত চাপ সৃষ্টিকারী কর্টিসলকে উদ্দীপিত করে। খাবার খাওয়ার জন্য কর্টিসল গ্লুকোনোজেনেসিস প্রক্রিয়া সৃষ্টি করে। যা লিভারে সঞ্চিত ফ্যাটি অ্যাসিড এবং প্রোটিন ভাঙ্গনে গ্লুকোজ উৎপাদনের উপর নির্ভর করে। এরপরই শরীর শক্তি সঞ্চয় হয়।

এছাড়াও ক্ষুধার্ত অবস্থায় অ্যাড্রেনালিন এবং কর্টিসল উভয়ই একসঙ্গে মেজাজকে প্রভাবিত করে। যা থেকে রাগান্বিত বা বিরক্তিকর আবেগ বেড়ে যায়। তাই বেশি রাগান্বিত বা বিরক্ত বোধ হলে বুঝে নিতে পারেন ক্ষুধা লেগেছে। তাতে আপনার আচরণের সঙ্গে শরীরের ভারসাম্য রাখতে সহায়তা করবে।

Link copied!