প্রতিদিনের পরিশ্রম ও মানসিক চাপের উপর নির্ভর করে শরীরে তৈরি হয় খাদ্য ও পানীয়ের চাহিদা। পানির পর সবচেয়ে জনপ্রিয়, সহজলভ্য পানীয় হলো চা। শত বছর ধরে বিশ্বের দুই–তৃতীয়াংশ মানুষ চা পান করে থাকেন। কিন্তু চা কি সব সময় পান করা উচিত বা যেকোনো সময় কি চা পান করা যায়? চলুন জেনে নেওয়া যাক।
অধিকাংশ পুষ্টিবিদরা মনে করেন, সকালের দিকে চা পান করা সবচেয়ে ভালো। কারণ, এই পানীয়তে আছে ক্যাফিন। ক্যাফিন শরীর সতেজ করে। কাজের শক্তি জোগায়। ফলে কাজ শুরুর আগে এক কাপ চা অনেকটাই কার্যকর হতে পারে। তবে অনেকেই সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে চা পান করেন, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। কারণ চা একটি অম্লজাতীয় তরল। এতে আছে ট্যানিন এবং ক্যাফেইন নামক পদার্থ, যা পাকস্থলীর অ্যাসিড উৎপাদন বাড়ায়। তাই সকালে খালি পেটে চা পান করলে শরীরের অ্যাসিড ও ক্ষারের ভারসাম্য বিঘ্নিত হতে পারে। সকালে চা পান করার আদর্শ সময় নাশতার ১৫ বা ২০ মিনিট পর।
অনেক পুষ্টিবিদ মনে করেন,দুই বেলার খাবার খাওয়ার মাঝখানে চা পান করা ভালো। তবে যাদের গ্যাস্ট্রিক, পেপটিক আলসার আছে তাদের চা পানে সর্তক থাকতে হবে। তাছাড়া হজমশক্তি বাড়াতে সক্ষম চা। তাই যদি কোনও শারীরিক জটিলতা না থাকে তবে এই পানীয়টি দিনের কোনও ভারী খাবারের পরেও পান করা যায়।
রাতে যাদের চা পানের অভ্যাস, তাদের ঘুমের সমস্যা ঘটাতে পারে ক্যাফিন। তবে আমেরিকার বিখ্যাত হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের গবেষণায় দেখা গেছে, ঘুমের আগে চা পান ঘুমে তেমন কোনো প্রভাব ফেলে না। কিন্তু বিভিন্ন ধরনের চায়ের মধ্যে ক্যাফেইনের তারতম্য নিদ্রাজনিত ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। কারণ, ক্যাফেইন আমাদের জাগ্রত রাখতে সাহায্য করে। ক্যাফেইনমুক্ত চা পান করলে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটার সম্ভাবনা কম।
খালি পেটে চা পান করা থেকে বিরত থাকা উচিত। খাবার এক থেকে দুই ঘণ্টা পর চা পান করা ভালো। আর চা বানানোর সময় চা-পাতা দীর্ঘ সময় চুলার আঁচে না থাকে, সে দিকে খেয়াল রাখবেন। এতে পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়।