হাঁপানি বা অ্যাজমা শিশুর শ্বাসনালির এক ধরনের অ্যালার্জি। আমাদের শরীরে কোন অবাঞ্চিত কিছু যেমন- ধূলিকণা, বিশেষ খাদ্যদ্রব্য, প্রসাধন, ওষুধ এমন কিছু প্রবেশ করলে সহজাত শারীরিক নিয়ম চেষ্টা করে একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় একে বের করে কিংবা নিষ্ক্রিয় করে দিতে। আর বের করে দেওয়ার প্রক্রিয়ায় অনেক সময় অতিরিক্ত ধাপের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াই হচ্ছে অ্যালার্জি।
অ্যালার্জি কেন হয়?
এরই মধ্যে শীতের আগমনির সুর শোনা যাচ্ছে। শীতে শিশু সহ সব বয়সীদের অ্যালার্জি হওয়ার প্রবণতা বাড়ে। কারণ এসময় বায়ুতে ধূলাবালির পরিমাণ বেড়ে যায়। আর অ্যালার্জির একটি বড় কারণ ধূলাবালি। আবার অনেকের অনেক খাবারে অ্যালার্জি থাকতে পারে। তাছাড়া উৎকট গন্ধ বা স্প্রে, সিগারেট বা অন্যান্য ধোঁয়া, পরাগ বা ফুলের রেণু, পশুপাখির পালক, লোমশ খেলনা, ছত্রাকের স্পোর থেকেও অ্যালার্জির সমস্যা হতে পারে। পরে সেখান থেকে হাঁপানীর সৃষ্টি হয়।
শিশুদের হাঁপানি থেকে বাঁচাতে করণীয়
- শীত ছাড়াও প্রায় সারাবছরেই বায়ুতে ধূলাবালি থাকে অনেক। তাই শিশুদে হাঁপানী থেকে বাঁচাতে মাস্ক পরার অভ্যাস করতে হবে।
- ঘরে মশার কয়েল/স্প্রে ব্যবহার না করে মশারির ব্যবহার করুন। কারণ কয়েলের ধূয়া ফুসফুসের জন্য ক্ষতিকর। এমনকি শিশুর সামনে ধূমপান করা পরিহার করুন। বাইরে ধূমপান করলেও ধূমপানের অন্তত আধা ঘন্টা পর শিশুর সামনে আসুন।
- শীতকালে অনেকেই শিশুর জন্য কম্বল ব্যবহার করেন। তবে কম্বল ব্যবহার এড়িযে চলাই ভালো। কারণ কম্বলের সূক্ষ্ম আঁশ শ্বাসনালিতে সমস্যা করে, এক্ষেত্রে কভারসহ লেপ ব্যবহার করবেন। এমনকি আঁশযুক্ত খেলনা, কার্পেট, কুশন পরিহার করা উচিত।
- শিশুদের খাবার খেতে দেওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। বিশেষ করে যে শিশুরা মায়ের বুকের দুধের সঙ্গে বাইরের খাবার খাওয়া শুরু করেছে তাদের খাবার দেওয়ার ক্ষেত্রে যাচাই করতে হবে সেই খাবারে শিশুর অ্যালার্জি আছে কি না। এক্ষেত্রে যে কোন খাবার শুরু করার সময় খুব অল্প পরিমাণ দিয়ে খেয়াল রাখতে হবে এই খাবার খাওয়ার পর কোন রকম অস্বস্থি হয় কি না। যদি হয় তাহলে সেই খাবার এড়িয়ে যেতে হবে অন্যথায় দিতে পারেন। তবে একাধিক অ্যালার্জিযুক্ত খাবার একই দিন না দেওয়াই ভালো।
- শিশুকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। তাকে নিয়মিত বাইরে রোদের কাছে নিয়ে যেতে হবে। কারণ ভিটামিন ডি’র ঘাটতিও অ্যালার্জির কারণ হতে পারে। মৌসুমী ফল খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।
- কৃত্রিম রংযুক্ত খাবার (প্যাকেটের জুস, চকোলেট, চিপস, সস), ফাস্ট ফুড, ক্ষতিকর রাসায়নিকযুক্ত (ফরমালিন, কার্বাইড ইত্যাদি) ফল, সবজি পরিহার করবেন।
- শিশুকের কে কৌটার দুধ, গরু-ছাগলের দুধ, প্যাকেটের সিরিয়াল পরিহার করতে হবে। ঘরে তৈরি খাবার খেতে দিতে হবে।
- নিয়মমতো শিশুর সব ধরণে টিকা দিন।