গর্ভাবস্থায় একজন নারীকে অনেক ধরনের শারীরিক সমস্যার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। তেমনিই একটি সমস্যা পায়ে পানি চলে আসা। গর্ভাবস্থায় শরীরের কোষে অতিরিক্ত তরল জমার কারণে ফুলে যাওয়া সমস্যার নাম ইডিমা বা শরীরে পানি আসা। সাধারণত ৫০ থেকে ৮০ শতাংশ অন্তঃসত্ত্বা নারীর এ সমস্যা দেখা দেয়। এ সময় কোষে অতিরিক্ত তরল জমার কারণে এই ফুলে যাওয়া। তবে হাত ও পায়ে এর প্রভাব বেশি দেখা যায়। এতে অনেকে ভয় পেয়ে যায়।
কেন পানি আসে
গর্ভকালীন প্রথম তিন মাসে রক্তে প্রোজেস্ট্রেরন হরমোনের মাত্রা অনেক বেড়ে যায়। শরীরে পানি জমার এটি অন্যতম কারণ। শিশুর আকার ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে মায়ের শরীরে প্রায় ৫০ শতাংশ বেশি রক্ত ও তরল উৎপাদিত হয়। আবার গর্ভের শিশু যখন বড় হয়, তখন তার মাথার চাপে মায়ের নিম্নাঙ্গের যে শিরাগুলো দিয়ে রক্ত হৃৎপিণ্ডে প্রবাহিত হয়, সেগুলোতে রক্তের চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়। ফলে নিম্নাঙ্গ থেকে হৃৎপিণ্ডে রক্তপ্রবাহ কমে যায়। শিরা থেকে তরল বের হয়ে শরীরের টিস্যুতে জমতে থাকে। এতে পায়ে পানি আসে বা ফুলে যায়।
গর্ভাবস্থায় পায়ে পানি আসলে যা করবেন
- গর্ভাবস্থায় নিয়মিত হাঁটাচলা বা ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন। ব্যায়ামের ফলে রক্তপ্রবাহ স্বাভাবিক থাকে ও অতিরিক্ত তরল ঘাম হিসেবে বেরিয়ে যায়। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই গর্ভাবস্থায় উপযোগী ব্যায়াম করুন।
- গর্ভাবস্থায় অনেকক্ষণ দাঁড়াবেন বা বসবেন না। রান্না করতে গিয়ে বা অন্যান্য কাজে দীর্ঘ সময় তারা বসার কথা ভুলেই যান। আর পায়ে পানি চলে আসলে দীর্ঘ সময় একই আসনে থাকবে না। তার বদলে কিছুক্ষণ পরপর চেয়ারে বসুন। তারপর আবার দাঁড়ান।
- ঢিলেঢালা ও আরামদায়ক কাপড় পরার চেষ্টা করুন যাতে শরীরে চাপ না পড়ে।
- গর্ভাবস্থায় ফোলাভাব কমানোর সহজ উপায় হল লবণ গ্রহণের হার কমানো। কারণ লবণ গ্রহণ শরীরে অতিরিক্ত পানি ধরে রাখে।
- গর্ভাবস্থায় যারা অফিস করেন, তারা অফিসের ডেস্কে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকবেন না। ২৫ মিনিট পর পর অন্তত উঠে দাঁড়ান। সম্ভব হলে কিছুক্ষণ হাঁটুন। এতে পায়ের ফোলাভাব কমবে।
- আরামদায়ক জুতা ব্যবহার করুন।
- পানি পান শরীরের ফোলাভাব কমায়। শরীরে পানি স্বল্পতা দেখা দিলে তার ঘাটতি পূরণের জন্য শরীর তরল নিঃসরণ শুরু করে। ফলে পা ফোলার সমস্যা দেখা দিতে পারে।