দাঁতের বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে একটি হলো পাথর হওয়া। কারও কারও দাঁতে এক ধরনের হলুদ বা বাদামি রঙের প্রলেপ দেখা যায়। এটি ধীরে ধীরে কালচেও হয়ে যেতে পারে। এই সমস্যাকে দাঁতে পাথর হওয়া বলে। ইংরেজিতে একে বলে টার্টার বা ক্যালকুলাস।
চিকিৎসকরা বলছেন, দাঁতে পাথর বা ক্যালকুলাস হয় মূলত আমাদের সচেতনতার অভাবে। মুখের ভেতরটা ভালোভাবে পরিষ্কার না করার কারণে এমন সমস্যা বেশি হয়। মুখের ভেতরে থাকা জীবাণু, খাদ্য কণা ও থুতুর মধ্যে থাকা প্রোটিন একসঙ্গে মিলে তৈরি করে প্লাক। এই প্লাকই ঠিকমতো পরিষ্কার না করলে মিনারেলসের সঙ্গে মিশে স্তরের ওপর স্তর তৈরি করে।
দাঁতে পাথর হওয়ার সমস্যা কারও কারও ক্ষেত্রে বেশি দেখা যায়। বিশেষ করে যারা মিষ্টি জাতীয় খাবার ও আলু বেশি খান। ময়দার তৈরি খাবার বেশি খেলেও দাঁতে পাথর জমতে পারে। যারা ধূমপান করেন বা তামাকজাত দ্রব্য চিবিয়ে নেশা করেন তারাও এই সমস্যা থেকে রেহাই পান না। এক্ষেত্রে দিনে দুইবার দাঁত মাজতে হবে।
প্রতিবার অন্তত দুই মিনিট ধরে দাঁত মাজতে হবে। তিন মাস পরপর টুথব্রাশ পরিবর্তন করতে হবে। ফ্লুয়োরাইড যুক্ত টুথপেস্ট এক্ষেত্রে সমস্যা দূরে রাখতে পারে। ৬ মাস পরপর দাঁতের ডাক্তারের কাছে দাঁত দেখাতে হবে। খেতে হবে স্বাস্থ্যকর খাবার। সেইসঙ্গে তামাকজাত দ্রব্য থেকে অবশ্যই দূরে থাকতে হবে।
দাঁতে পাথর হলে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে গিয়ে স্কেলিং করাতে পারেন। এছাড়া ঘরোয়া কিছু উপায়েও এই সমস্যা কমানো যেতে পারে।
বেকিং সোডা, ডেন্টাল পিক, লবণ, হাইড্রোজেন পেরোক্সাইড, পানি, টুথব্রাশ, কাপ, অ্যান্টিসেপটিক মাউথওয়াশ নিন। এবার কাপে এক টেবিল চামচ বেকিং সোডার সঙ্গে আধা চা চামচ লবণ মিশিয়ে নিন। গরম পানিতে টুথব্রাশ ভিজিয়ে বেকিং সোডা ও লবণের মিশ্রণ দিয়ে ৫ মিনিট ধরে দাঁত ব্রাশ করুন। শেষে কুলকুচি করে নিন।
এরপর এক কাপ হাইড্রোজেন পারোক্সাইডের সঙ্গে আধ কাপ হালকা গরম পানি মিশিয়ে নিন। এই পানি মুখে নিয়ে এক মিনিট রাখুন। আধা কাপ পানি দিয়ে কুলকুচি করে ফেলুন। ডেন্টাল পিক দিয়ে দাঁতের হলুদ টার্টার ধীরে ধীরে ঘষে তুলুন।
মাড়ির ক্ষতি এড়াতে ডেন্টাল পিক ব্যবহারের সময়ে সাবধান থাকতে হবে। অ্যান্টিসেপটিক মাউথওয়াশ দিয়ে কুলকুচি করুন। স্ট্রবেরি ও টমেটো দাঁতের জন্য ভালো। টার্টার পরিষ্কার করার জন্য স্ট্রবেরি বা টমেটো দাঁতে ঘষে ৫ মিনিট রাখুন। এতে টার্টার নরম হয়ে আসবে।
তারপর বেকিং সোডা মেশানো হালকা গরম পানি দিয়ে কুলি করে ফেলুন। স্ট্রবেরি বা টমেটো ছাড়াও ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ক্যাপসিকাম, লেবু, পেঁপে ও কমলালেবু ব্যবহার করতে পারেন।