ঋতু পরিবর্তন হলেই অসুখ বেধে বসে শরীরে। জ্বর, ঠাণ্ডা তো হবেই। পাশাপাশি শুরু হবে সর্দি, শুষ্ক কাশিও। এই সময় শিশু থেকে বৃদ্ধদের অবস্থা বেশি খারাপ হতে পারে। যদিও ঋতু বদলের এই সাধারণ অসুখ সব বয়সীদের আক্রান্ত করে। তাই সতর্কতাও সবাইকেই মেনে চলতে হয়।
শীত প্রায় শেষের দিকে । তাপমাত্রা কিছুটা বেড়ে চলেছে। সঙ্গে বইছে শুকনো বাতাস। এই বাতাস গায়ে মাখলেই শুরু হয় শুষ্ক কাশি। এছাড়াও যারা ধুমপান করেন, যাদের অ্যাজমার রয়েছে কিংবা ধুলোবালি থেকে অ্যালার্জি হয় তাদের জন্য় শুষ্ক কাশি হওয়া সাধারণ ঘটনা।
শুষ্ক কাশি হলে খাওয়ার অরুচি হয়। গলার ভেতরে খুসখুসে ভাব হয়। যা থেকে অস্বস্তি বেড়ে যায়। অনেকেই কাশি হলেই ওষুধ সেবন করেন। যার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় ঘুম বেড়ে যায়. বমি ভাব. মেজাজ খিটখিটে হতে পারে। তাই শুষ্ক কাশি হলে ওষুধ সেবনের আগে প্রাকৃতিক উপায়ে সেরে তোলার চেষ্টা করুন।
শুষ্ক কাশি হলে যা করবেন
- প্রথমেই পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন। রাতে দ্রুত ঘুমানোর চেষ্টা করুন। ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা পর্যাপ্ত ঘুম হলে শরীরের ক্লান্তিভাব কমে যাবে। মানসিক চাপও কমবে। কাশিও কমে আসবে।
- বাইরে গেলে অবশ্যই মাস্ক পরার অভ্যাস করুন। কুসুমগরম পানি দিয়ে গোসল করতে হবে। ফ্রিজের ঠান্ডা খাবার খাওয়া যাবে না। প্রয়োজনে কুসুমগরম পানি পান করুন।
- শ্বাসনালী থেকে কফ বা শ্লেষ্মা পরিষ্কার করা গেলে শুষ্ক কাশি কমে যাবে। এরজন্য পানি, জুস এবং সুপ পান করতে পারেন।
- চা বা কফি পান কমিয়ে দিন। এগুলো শরীর থেকে পানির ভাগ কমিয়ে দেয়। তাই পানি শূন্যতা হতে পারে। কাশিও বেড়ে যেতে পারে। তাই চা বা কফির অভ্যাস থাকলে তা কমিয়ে আনুন। সারাদিনে এককাপ পান করতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে মসলা চা পান করলে উপকার পাবেন। দিনে কয়েকবার মসলা চা পান করতে পারেন।
- শুষ্ক কাশিতে গলাব্যথা হয়। তাই কুসুম গরম পানি দিয়ে গার্গল করে নিন। এতে গলাব্যথা কমে যাবে। এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে আধা চা চামচ লবণ মিশিয়ে নিন। এটা দিয়ে কিছুক্ষণ গার্গল করুন। কাশিও কমে যাবে।
- লেবু ও মধু দিয়ে চা পান করলেও উপকার পাবেন। কাশি সারাতে মধু অনেক উপকারী। এটি ওষুধের চেয়েও ভালো কাজ করবে বলে গবেষণায় প্রমাণও হয়েছে। মধু গলার শ্লেষ্মা কমাতে পারে। তবে শিশুদের মধু খাওয়ানোর আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
- শুষ্ক কাশি কমাতে আদা রস উপকারী হতে পারে। লেবুর শরবতের মধ্যে আদা কুচি মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে। এছাড়াও আদা সেদ্ধ পানিও পান করতে পারেন। এটি শ্লেষ্মা দূর করবে। আদার রসে সামান্য মধু মিশিয়ে খেলেও উপকার পাবেন।
- তুলসী পাতার রসও কাশি কমাতে সাহায্য করবে। তুলসী পাতা পেষ্ট করে রস বের করে নিন। এতে সামান্য মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। কাশি কমে যাবে।
- কাশি কমাতে কার্যকরী পানীয় হতে পারে হলুদ দুধ। এক গ্লাস গরম দুধের মধ্যে আধা চা চামচ হলুদের গুঁড়া মিশিয়ে জ্বাল করে নিন। এরপর নামিয়ে এতে মধু মিশিয়ে পান করুন। কাশি কমাতে এটি বেশ কার্যকর হবে।