দাঁত ছাড়া খাওয়ার কথা আমরা চিন্তাও করতে পারি না। আর সেই দাঁতেরই সবচেয়ে বেশি অবেহেলা করে থাকি কমবেশি আমরা সবাই। অযত্নে-অবহেলায় একটা সময় গিয়ে আর কিছুই করার থাকে না। অবশেষে হয় জোরাতালি, নয় ফেলেই দিতে হয় আমাদের দেহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই অংঙ্গটি। ক্ষয়ে যাওয়া দাঁতের চিকিৎসার তেমনই একটি পর্যায় হলো রুট ক্যানেল। চলুন রুট ক্যানেল সম্পর্কে জেনে নিই-
রুট ক্যানেল চিকিৎসা
রুট ক্যানেল হলো দাঁতের এমন একটা চিকিৎসা, যেখানে দাঁত ফেলে না দিয়ে কেবল দাঁতের সংক্রমিত অংশগুলো বের করে দাঁতকে আগের মতো সচল ও কর্মক্ষম রাখা। প্রাথমিকভাবে দাঁতে সামান্য ক্ষয় হলে তা চিকিৎসা করিয়ে নিলে রুট ক্যানেল পর্যন্ত যেতে হয় না। যদি অবহেলা করে ক্ষয় দীর্ঘদিন রেখে দেওয়া হয় তাহলে দাঁতের দন্তমজ্জা বা নার্ভ পর্যন্ত গিয়ে চলে গিয়ে রুট ক্যানেলের পরিস্থিতি তৈরি করে। সাধারণত আক্কেল দাঁত ছাড়া অন্য সব দাঁতে রুট ক্যানেল করা হয়ে থাকে। তবে কোনো কারণে যদি মাড়ির প্রথম অথবা দ্বিতীয় দাঁত না থাকে কেবল সেক্ষেত্রেই আক্কেল দাঁতের রুট ক্যানেল করা হয় ব্রিজ নামক চিকিৎসা করার জন্য।
রুট ক্যানেলের পরবর্তী চিকিৎসা
রুট ক্যানেল করার সময় সাধারণভাবে দাঁতের মাঝে গর্ত করে ইনফেকটেড নার্ভ বা দন্তমজ্জা বের করে আনা হয়। তাতে দাঁতের শক্তি কিছুটা কমে যায়। অনেক ক্ষেত্রে রোগী অর্ধেক বা তারও বেশি দাঁত ভেঙে নিয়ে আসেন। তাই দাঁতটিকে রুট ক্যানেল করার পর কর্মক্ষম ও সচল রাখার জন্য রুট ক্যানেলের পর ক্রাউন বা ক্যাপ করে নিতে বলা হয়। এতে দাঁত আগের মতো শতভাগ শক্তিশালী না হলেও ৮০ থেকে ৯০ ভাগ শক্তিশালী ও কর্মক্ষম থাকে।
রুট ক্যানেল করা দাঁতের যত্ন
রুট ক্যানেল করা দাঁত স্বাভাবিক দাঁতের তুলনায় একটু বেশি যত্ন নিতে হয়। নিয়মিতভাবে ব্রাশ, ডেন্টাল ফ্লস ও ইন্টার ডেন্টাল ব্রাশ ব্যবহার করে দাঁত পরিস্কার রাখতে হয়। শক্ত ও মুচমুচে ধরনের খাবার পরিহার করা। মাড়ি নিয়মিতভাবে ম্যাসাজ করা ও বছরে অন্তত একবার ডেন্টাল চেকআপে যাওয়া।
রুট ক্যানেল পরিহারের উপায়
- একটু সচেতনতাই পারে আমাদের দাঁতের এ ধরনের ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতে। ছয় মাসে না
- হোক অন্তত বছরে একবার ডেন্টাল চেকআপে যাওয়া।
- নিয়মিত সকালে নাশতা খাবার পর ও রাতে শোবার আগে দাঁত ব্রাশ করা।
- দিনে অন্তত একবার ডেন্টাল ফ্লস ব্যবহার করা।
- মিষ্টি ও বেকারি আইটেম সফট ড্রিংকস খাবার পর ভালোভাবে কুলি করা।