একটা নির্দিষ্ট বয়স পর সাধারণত মানুষ নানান রকম ব্যথায় ভোগে। হাঁটুব্যথা, পিঠব্যথা, ঘাড়ব্যথা নানা কারণে হয়ে থাকে। তবে শোল্ডার জয়েন্টের ব্যথা একটি পরিচিত সমস্যা। এই শোল্ডার জয়েন্টের ব্যথার প্রধানতম কারণ হলো ফ্রোজেন শোল্ডার। এতে কাঁধ ব্যথার সঙ্গে কাঁধের সন্ধি জ্যাম হয়ে গেছে বলে অনুভূত হয় বা কাঁধ নাড়াতে কষ্ট হয়। এটি ‘ফ্রোজেন শোল্ডার’ নামে বেশি পরিচিত হলেও চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় একে ‘অ্যাডহেসিভ ক্যাপসুলাইটিস’ বলা হয়।
চেনা যাবে যেভাবে
ফ্রোজেন শোল্ডারের ব্যথা শুরু হয় কাঁধ থেকে। তারপর সেই ব্যথা ধীরে ধীরে নেমে আসে হাত পর্যন্ত। হাত নাড়তে বা তুলতে অসুবিধা হয়। ব্যথা কমে এলেও একটা পর্যায়ের পর হাত আর ওপর দিকে ওঠে না কিংবা পেছন দিকে ঘোরানো যায় না। মোট কথা, পেশির নমনীয়তা একেবারেই নষ্ট হয়ে আসে।
কারা বেশি এ সমস্যায় ভোগে
সাধারণত ৪০-৬০ বছর বয়সী মানুষের ফ্রোজেন শোল্ডার হওয়ার ঝুঁকি বেশি। ডায়াবেটিস রোগীদের এ সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি অপেক্ষাকৃত বেশি। এ ছাড়া স্থূলতা, অতিরিক্ত চর্বি বা হাইপারলিপিডেমিয়া, হৃদ্রোগ, স্ট্রোকের রোগীদের এটি বেশি হতে দেখা যায়।
করণীয়
সাধারণত কিছু সময় পর নিজে থেকেই এ ধরনের ব্যথা কমে আসে। কিন্তু তা সময়সাপেক্ষ। ক্ষেত্রবিশেষে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যথা কমানোর ওষুধ কিংবা ফিজিয়োথেরাপির সাহায্য নিতে হয়। চলুন জেনে নেই ফ্রোজেন শোল্ডার হলে করণীয় কী-
- শুরুর দিকে সাধারণত ব্যথা বেশি হয়। ব্যথা বেশি হলে চিকিৎসকের পরামর্শে ব্যথানাশক গ্রহণ করলে ব্যথা কমে যাবে।
- ফ্রোজেন শোল্ডারের ব্যথা কমাতে ফিজিওথেরাপি ও ব্যায়াম খুবই কার্যকর চিকিৎসা। প্রয়োজনে ফিজিওথেরাপি নিতে হবে। অনেকের ক্ষেত্রে ঘরে কিছু ব্যায়াম করলেই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
- তবে যাদের ডায়াবেটিস আছে, তাদের ক্ষেত্রে চিকিৎসক প্রয়োজন মনে করলে সুগার নিয়ন্ত্রণে এনে জয়েন্টে স্টেরয়েড ইনজেকশন দিতে পারেন।
- সন্ধির নড়াচড়া একেবারে বন্ধ হয়ে গেলে অনেক সময় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জেনারেল অ্যানেসথেশিয়া দিয়ে নড়াচড়া করিয়ে থাকেন।
ফ্রোজেন শোল্ডার থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য দরকার বেশ লম্বা সময়, সেই সঙ্গে প্রক্রিয়াটা বেশ শ্রমসাধ্যও। তাই আগে থেকেই এমন কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে যেন এ জটিলতা না হয়। সেই সঙ্গে একবার আক্রান্ত হওয়ার পরও বেশ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।